
কাজী নজরুল ইসলাম
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সাংসদ ইকবাল হোসেন অপু ও জাজিরা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোবারক আলী শিকদারের ব্যবস্থাপনায় গত দুই মাস আগে থেকে ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে “মা” ইলিশ রক্ষা করার জন্য জাজিরা উপজেলার পদ্মা নদীর তীরবর্তী পশ্চিম নাওডোবা, পূর্ব নাওডোবা, পালেরচর, বড়কান্দি, জাজিরা, বিলাশপুর ও কুন্ডেরচর এই সাতটি ইউনিয়নের অন্তত বিশটি স্থানে সচেতনতামূলক প্রচারাভিযান চালানো হয়। জাজিরা উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, মৎস বিভাগ, আওয়ামীলীগ ও তার অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা প্রচারাভিযান বাস্তবায়ন করেন। এর আওতায় সভা সমাবেশ, উঠান বৈঠক, মাইকিং, শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে আলোচনা করা হয়। প্রকৃত জেলে, মৌসুমী জেলে, নৌকা ও ট্রলার মালিক, দাদন ব্যবসায়ী, আড়ৎ মালিক, এনজিও কর্মীদের সহ সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রায় প্রতিজন নাগরিককে মুটিভেশন করা হয় মা ইলিশ রক্ষা করার জন্য। প্রচারাভিযানের সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেন ইকবাল হোসেন অপুর আস্থাভাজন জাজিরার গোপালপুরের বাবুল আকন।
দীর্ঘদিনের এই প্রচারনার পরে ৮ অক্টোবর সন্ধ্যার পর থেকেই কয়েকটি ট্রলার ও সী বোট নিয়ে বাবুল আকন সহ জাজিরার আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছা সেবকলীগের শতাধিক তরুন পদ্মা নদীতে রাত দিন ২৪ ঘন্টা মা ইলিশ নিধন বিরোধী টহল দিতে শুরু করেন। প্রশাসনের পাশাপাশি দলীয় কর্মীদের প্রতিরক্ষা ব্যুহ ভেদ করে টানা তিনদিন নদীতে উল্লেখযোগ্য কোন মাছ ধরার নৌকা নামতে পারেনি। ইলিশ ধরতে প্রস্তুতি নিতে গিয়ে ১৫-২০ জন এই টিমের হাতে আটক হয়ে সাজাপ্রাপ্ত হওয়ার পর ইলিশ নিধনকারীরা ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পরে।
ফলে, এলাকার যে সকল অসাধু চক্র গত বছরেরর ন্যায় এবারও মা ইলিশ ধরার জন্য কোটি কোটি টাকা ইনভেষ্ট করেছে তাদের মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পরে। তারা কৌশল আটতে থাকে এ মহৎ উদ্যোগকে ব্যর্থ করে দিতে। চক্রান্তকারীদের টার্গেটে পরিনত হন বাবুল আকন। হীন স্বার্থান্বেষীরা পরিকল্পিত ভাবে শনিবার সকালে তাদের ষড়যন্ত্রের জালে আটকে ফেলে বাবুল আকনকে। বিষয়টি বিকৃতরূপে মুহুর্তেই ছড়িয়ে পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। নিমিষেই একটি মহৎ উদ্যোগের অপমৃত্যু ঘটে। পদ্মা নদীর জাজিরা অংশ চলে যায় “ইলিশ মাফিয়া” চক্রের দখলে।
অপু ভাই ও মোবারক ভাইয়ের প্রতি অনুরোধ আপনারা ভেঙ্গে পরবেন না। দুষ্ট চক্রের সাজানো ষড়যন্ত্রের কারণে অভিমানে ঘরে বসে থাকবেন না। দেশাত্ববোধের দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে গিয়ে কত দেশ প্রেমিকইতো কত ধরনের নির্যাতন ভোগ করেছেন, কত লোককেই তো মিথ্যে অপবাদ মাথায় নিয়ে আত্মহুতি দিতে হয়েছে। কত বীর সন্তানেরাই তো তাদের জীবন দিয়ে দেশ প্রেমের কঠিন দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গিয়েছেন। আপনারা প্রশাসনের কাছ থেকে আরো বেশী সহায়তা নিন। রাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট সেক্টরের সাথে যোগাযোগ করে আইন-শৃংখলা বাহিনীর শক্তিশালী টিম সার্বক্ষনিক মোতায়েনের ব্যবস্থা করুন। জেলা প্রসাসনের সহায়তা নিয়ে সব সময়ের জন্য মঙ্গল মাঝির ঘাট এলাকা এবং কুন্ডেচর এলাকায় অন্তত দুইজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিযুক্ত করার ব্যবস্থা করুন। ষড়যন্ত্রকারীদের কুটচাল নস্যাৎ করে দিন। দয়া করে ওই মুনাফালোভী চক্রের হাত থেকে জাতীয় সম্পদ মা ইলিশ রক্ষা করুন।
প্রিয় নেতা অপু ভাই, আমরা আমাদের বিশ্বাসের জায়গা থেকে বলছি, “২৮ দিনের মা ইলিশ রক্ষার অভিযানে আপনি যেভাবে একটি মহা পরিকল্পনা প্রনয়ণ করে কাজ করেছেন, দেশের অপর কোন অঞ্চলে অন্য কোন নেতা এ ভূমিকা নিয়েছে বলে আমার জানা নেই। সুতরাং, আপনার বিপুল অর্জনকে যারা বুমেরাং করে দিতে তৎপর, তাদের মুখে চুনকালি লেপন করে জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনাকে বাস্তবায়ন করুন”।
আপনার মন্তব্য