
স্টাফ রিপোর্টার
পদ্মার পানি কমতে শুরু করেছে। কিন্তু পানি কমার সাথে সাথে নদী ভাঙ্গার মাত্রা আরো বেড়ে গেছে।
মঙ্গলবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের মুন্সীকান্দি গ্রামের ১৫টি বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। আরও ৩০টি বাড়িঘর ভাঙ্গনের হুমকিতে রয়েছে। ইতোমধ্যে ভাঙ্গন রোধে এক হাজার ৯শ ৪৬টি বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবি)।
শরীয়তপুর জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবি) অফিস সূত্র জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া শুরেশ্বর পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি বিপদসীমার ৩৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। মঙ্গলবার রাত ১টা থেকে পদ্মার পানি কমতে শুরু করায় নওপাড়া মুন্সীকান্দি গ্রাম পুণরায় ভাঙ্গতে শুরু করেছে।
নওপাড়া মুন্সীকান্দি গ্রামের লতিফ মাদবরের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম জানান, দুই বছর আগেও তার স্বামীর ১শ শতাংশ জমি ছিল। কিন্তু সর্বনাশা পদ্মা তাদের ভিটামাটি এবং ফসলি জমি কেড়ে নিয়েছে। জমি, বাড়িঘর সব হারিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য এনায়েতুল্লাহ’র দুই শতাংশ জমির ওপর দোচালা টিনের ঘর করে বৃদ্ধ স্বামী, ছেলে, ছেলের বউ ও দুই নাতনীকে নিয়ে থাকতেন। কিন্তু গত মঙ্গলবার রাতে সেই জমি ও ঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
একই গ্রামের গিয়াস উদ্দিন বেপারী বলেন, মঙ্গলবার রাতে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ঘুমিয়েছিলাম। হঠাৎ বিকট শব্দে ঘুম ভেঙ্গে যায়। ঘরের দরজা খুলে দেখি ঘরের সামনের জমি নদীগর্ভে চলে গেছে। প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় ঘরটি কোনো রকমে সরিয়ে নিতে পেরেছি। এখন অন্যের জমিতে টিনের ছাপড়া দিয়ে বসবাস করছি।
নওপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ আজগর সোহেল মুন্সী বলেন, পদ্মা নদীর পানি কিছুটা কমতে শুরু করেছে। কিন্তু পানি কমার সাথে সাথে বিচ্ছিন্ন স্তানে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে নওপাড়া মুন্সীকান্দি গ্রামের ১৫টি ঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। অনেক গুলো বাড়িঘর হুমকির সম্মুখীন হওয়ায় তাদেরকে অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
শরীয়তপুর জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী সুমন চন্দ্র বনিক বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং ভাঙ্গন রোধে বুধবার নওপাড়া মুন্সীকান্দি গ্রামে এক হাজার ৯শ ৪৬টি বালু ভর্তি জিওব্যাগ ফেলা হয়েছে। আরও ৪ হাজার ৪শ ৮৭টি জিওব্যাগ ফেলা হবে।
আপনার মন্তব্য