স্টাফ রিপোর্টার
নড়িয়া উপজেলা হিসাব রক্ষণ অফিসের অডিটর মোঃ শওকত আলীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অবসর প্রাপÍ কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং সরকারী চাকুরীতে যোগদান ও বদলীরসহ বিভিন্ন দপ্তরের ফাইল অকারণে আটকে রেখে ঘুষ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
শুধু তাই নয়, তাদের এ ঘুষ নেয়ার হাত থেকে বাঁচার জন্য অবসর প্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর নিকট লিখিত অভিযোগ করেছেন। তাদের অভিযোগ, নড়িয়া উপজেলা হিসাব রক্ষণ অফিসের অডিটর মোঃ শওকত আলী ঘুষ ছাড়া কিছু বোঝেন না ! ঘুষ ছাড়া তিনি কোন ফাইলে স্বাক্ষর করেন না। তার এ ঘুষ নেয়ার ব্যাপারটি এখন ওপেন সিক্রেটে পরিণত হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগীরা বলেন, জুন মাসের বিল পাশ করতে হলে মোঃ শওকত আলীকে মোটা অংকের উৎকোচ দিতে হয়। উৎকোচ না দিলে মাসের পর মাস ঘুরাতে থাকেন তিনি। আর উৎকোচ দিলেই বিল পাস হয়ে যায়। যে সকল কর্মকর্তা, কর্মচারী এ উপজেলা থেকে অন্যত্র বদলি হয়ে যান, তাদের এলপিসি তৈরির জন্য তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে ১ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ নেন তিনি।
শুধু তাই নয়, নতুন চাকরিতে যোগদানকৃত কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের জিপিএফ খোলার জন্য ২ থেকে ৪ হাজার টাকা ঘুষ নেন তিনি। কোন পেনশন কেস আসলে তিনি ঐ দিনটিকে ঈদের দিন মনে করেন। যে কোন পেনশন কেস থেকে তিনি ২০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ নেন। নতুন কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী বদলি হয়ে নড়িয়া আসলে তাদের বেতন ভাতা ও নাম রেজিস্ট্রারে তোলার জন্য মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেন শওকত আলী। টাকা না দিলে মাসের পর মাস ঘুরাতে থাকেন। বন্ধ থাকে তাদের বেতন ভাতা।
এ ব্যাপারে নড়িয়া উপজেলা হিসাব রক্ষণ অফিসের অডিটর মোঃ শওকত আলীর কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমি কয়েক মাস হলো নড়িয়া এসেছি। এর আগে আমি জাজিরা ছিলাম। আমার বিরুদ্ধে যদি ঘুষ নেয়ার অভিযোগ থাকে তাহলে নিউজ করেন। আপনারা নিউজ করলেও আমার কিছু যায় আসে না”।
এ ব্যাপারে নড়িয়া উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার রায়ের সাথে তার অফিসে আলাপ করতে গেলে অফিসটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরবর্তীতে তার সাথে মুঠোফোনে আলাপ কালে তিনি বলেন, আমি কয়েকদিন হলো নড়িয়ায় যোগদান করেছি। আমি অফিসিয়াল কাজে ঢাকায় আছি। শওকত সাহেব যে ঘুষ নেন, এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। অভিযোগ যেহেতু হয়েছে, সেক্ষেত্রে তদন্ত স্বাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ ব্যাপারে জেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মোঃ মোস্তফা কামাল এর সাথে মুঠোফোনে আলাপ কালে তিনি বলেন, নড়িয়া উপজেলা হিসাব রক্ষণ অফিসের অডিটর মোঃ শওকত আলী’র ঘুষ নেয়ার ব্যাপারটি আমি জানি না। আমার কাছে ফাইল আসলে আমি তাৎক্ষণিক ভাবে স্বাক্ষর করে দেই। সে যদি ঘুষ নিয়ে থাকেন, আর তার বিরুদ্ধে যদি অভিযোগ আসে, তাহলে তদন্ত স্বাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আপনার মন্তব্য