
স্টাফ রিপোর্টার
জাজিরা উপজেলা সমাজসেবা অফিসারের প্রত্যক্ষ মদদে লাউখোলার কাউয়াদিতে অবস্থিত আঃ ওহাব কাওমী মাদ্রাসা ও এতিমখানার সভাপতি আবদুল বারেক মাদবরের বিরুদ্ধে এতিমদের নামে বরাদ্দকৃত ৪৮ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
তিনি একদিন দু’দিন নয়, দীর্ঘ ১৮ বছর যাবৎ এতিমদের নামে এই বরাদ্দকৃত টাকা আত্মসাৎ করে আসছেন। অথচ বাস্তবিক অর্থে আঃ ওহাব কাওমী মাদ্রাসা ও এতিমখানায় কোন এতিম নেই। যারা রয়েছেন তারা কাওমী মাদ্রাসার ছাত্র। তারা নিজ খরচে খাওয়া দাওয়া ও লেখাপড়া শিখছেন।
এদিকে জাজিরা উপজেলা সমাজসেবা অফিসার বলছেন, লাউখোলার কাউয়াদিতে অবস্থিত আঃ ওহাব কাওমী মাদ্রাসা ও এতিমখানায় এতিমদের যাচাই বাছাই করেই তাদের নামে টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
অপরদিকে সভাপতি আবদুল বারেক মাদবর অবৈধভাবে এতিমদের নামে টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করছেন, তা এতো বছরেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিতে কেন আসলো না এবং তার বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলো না, এ নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
উপজেলা সমাজসেবা অফিসারের প্রত্যক্ষ মদদেই সভাপতি আবদুল বারেক মাদবর এতিমদের নামে বরাদ্দকৃত টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অনেকে ধারণা করছেন।
জাজিরা উপজেলা সমাজসেবা অফিস সূত্রে জানা যায়, আঃ ওহাব কাওমী মাদ্রাসা ও এতিমখানাটি ২০০২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এতিমখানাটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে এতিমখানায় ২০ জন এতিম দেখিয়ে সভাপতি আবদুল বারেক মাদবর প্রতি বছর ২ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা উত্তোলন করছেন। এই ভাবে ২০০২ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ৩৮ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা উত্তোলন করেছেন। এরপর ২০১৮ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ৯ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা উত্তোলন করেছেন। সব মিলে তিনি ৪৮ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা উত্তোলন করেছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আঃ ওহাব কাওমী মাদ্রাসা ও এতিমখানায় কোন এতিম নেই। যারা রয়েছেন তারা কাওমী মাদ্রাসার ছাত্র। তারা নিজ খরচে খাওয়া দাওয়া ও লেখাপড়া শিখছেন। এদিকে সভাপতির কাছে এতিমদের তালিকা চাইলে তিনি কোন তালিকা দেখাতে পারেননি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাদ্রাসার কতিপয় শিক্ষক এবং স্থানীয়দের সাথে আলাপ করে আরও জানা যায়, সভাপতি আবদুল বারেক মাদবর একজন চতুর মানুষ। সমাজসেবা অফিস থেকে যখনই কোন তদন্ত আসে, তখন সে বাহির থেকে কিছু এতিম ধরে এনে তদন্ত কমিটিকে দেখান। তদন্ত কমিটি ঐ সকল এতিমদের কোন কিছু জিজ্ঞাসা না করে চলে যান। বাস্তবিক অর্থে তারা এই এতিমখানার ছাত্র কি না, তাও জানতে চান না। প্রকৃত অর্থে এই এতিমখানায় কোন এতিম নেই। জাজিরা সমাজসেবা অফিসার এবং এতিমখানার সভাপতি যৌথভাবে এতিমদের নামে বরাদ্দকৃত টাকা তুলে আত্মসাৎ করছেন।
এ ব্যাপারে লাউখোলার কাউয়াদিতে অবস্থিত আঃ ওহাব কাওমী মাদ্রাসা ও এতিমখানার সভাপতি আবদুল বারেক মাদবরের আলাপ কালে তিনি বলেন, খুব কষ্ট করে এতিমখানাটি চালাচ্ছি। এই এতিমখানায় ৪/৫ জন এতিম রয়েছে। বাকী এতিমরা চলে গেছে।
এ ব্যাপারে জাজিরা উপজেলা সমাজসেবা অফিসারের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, লাউখোলার কাউয়াদিতে অবস্থিত আঃ ওহাব কাওমী মাদ্রাসা ও এতিমখানায় এতিমদের যাচাই বাছাই করেই টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যেহেতু অভিযোগ এসেছে তাই পূণরায় যাচাই বাছাই করা হবে।
আপনার মন্তব্য