স্টাফ রিপোর্টার
জাজিরা উপজেলা খাদ্য গুদামের উপ খাদ্য পরিদর্শক এবং ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ বুলবুল হাসানের বিরুদ্ধে অনিয়ম এবং দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তিনি সরকারের নিবন্ধিত ডিলারদেরকে চাল ওজনে কম দিচ্ছেন। আর এ কাজটি তিনি দীর্ঘ দিন যাবৎ করে যাচ্ছেন। সরেজমিনে জাজিরা উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের মধ্যে ৮টি ইউনিয়েনের ডিলারদের সাথে আলাপ কালে এ তথ্য বেড়িয়ে এসেছে। কোন ডিলার তার খাদ্য গুদামে চাল নিতে আসলে প্রতি ৫০ কেজির বস্তাকে ৫১ কেজি ধরে ওজন দিতে বাধ্য করেন। পরবর্তীতে সেই ৫১ কেজি চালের বস্তা ডিলারদের গুদামে গিয়ে ওজন দিলে হয় ৪৮ কেজি। এখানে প্রতি বস্তায় ৩কেজি চাল কম হয়।
জাজিরা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালে জাজিরা উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে হতো দরিদ্রের চাল বিতরণের জন্য ১৬জন ডিলার নিয়োগ দেয়া হয়। এ বছর ঐ সকল ডিলারদের মধ্যে মোট ৩ হাজার ৩শ ৫০ বস্তা চাল বিতরণ করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে সেনেরচর ইউনিয়নের ডিলার মোঃ সুরুজ মোল্যাকে ৩শ ৬০ বস্তা এবং একই ইউনিয়নের ডিলার সুমন সিকদারকে দেয়া হয় ১শ ৫০ বস্তা। বড়কান্দি ইউনিয়নের ডিলার মোঃ জুয়েল মিয়াকে দেয়া হয় ১শ ৫০ বস্তা এবং একই ইউনিয়নের ডিলার নাজমা আক্তারকে দেয়া হয় ১শ ৫০ বস্তা। পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নের ডিলার মোঃ রাজা মিয়াকে দেয়া হয় ১শ ৬৯ বস্তা এবং একই ইউনিয়নের ডিলার মিনু আক্তারকে দেয়া হয় ১শ ৬৯ বস্তা। নাওডোবা ইউনিয়নের ডিলার মোঃ সিরাজুল ইসলামকে দেয়া হয় ১শ ৯৭ বস্তা এবং একই ইউনিয়নের ডিলার বি.এম লুৎফর রহমানকে দেয়া হয়েছে ১শ ৯৮ বস্তা। মুলনা ইউনিয়নের ডিলার ইউসুফ ফকিরকে দেয়া হয়েছে ৩শ ১ বস্তা। বি.কে নগর ইউনিয়নের ডিলার মোসাম্মৎ ফাতেমা বেগমকে দেয়া হয়েছে ২শ ৬২ বস্তা। বিলাস ইউনিয়নের ডিলার মোঃ নূরুজ্জামান সরদারকে দেয়া হয়েছে ২শ ৮২ বস্তা। কুন্ডেরচর ইউনিয়নের ডিলার আলী অহম্মেদ বেপারীকে দেয়া হয়েছে ২শ ২৩ বস্তা। পালের চর ইউনিয়নের ডিলারকে দেয়া হয়েছে ১শ ৫০ বস্তা। গোপালপুর ইউলিয়নের ডিলারকে দেয়া হয়েছে ১শ ৫০ বস্তা। জাজিরা ইউনিয়নের ডিলার মোঃ জহির চৌকিদারকে দেয়া হয়েছে ১শ ৫৩ বস্তা এবং জয়নগর ইউনিয়নের ডিলার সানাল মিয়াকে দেয়া হয়েছে ২শ ৮৩ বস্তা। জাজিরা উপজেলা খাদ্য গুদামের উপ খাদ্য পরিদর্শক এবং ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ বুলবুল হাসান ৩ হাজার ৩শ ৫০ বস্তা থেকে ৩ কেজি করে চাল রেখে ডিলারদেরকে ৮হাজার ৩শ ৭৫ কেজি চাল কম দিয়েছেন। আর ঐ চাল তিনি কালো বাজারে বিক্রী করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এ ব্যাপারে সেনেরচর ইউনিয়নের ডিলার মোঃ সুরুজ মোল্যা, সুমন সিকদার, বড়কান্দি ইউনিয়নের ডিলার মোঃ জুয়েল মিয়া, নাজমা আক্তার, পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নের ডিলার মোঃ রাজা মিয়া, মিনু আক্তার, নাওডোবা ইউনিয়নের ডিলার মোঃ সিরাজুল ইসলাম, বি.এম লুৎফর রহমান, মুলনা ইউনিয়নের ডিলার ইউসুফ ফকির, বি.কে নগর ইউনিয়নের ডিলার মোসাম্মৎ ফাতেমা বেগম, বিলাস ইউনিয়নের ডিলার মোঃ নূরুজ্জামান সরদার, কুন্ডেরচর ইউনিয়নের ডিলার আলী অহম্মেদ বেপারী, জাজিরা ইউনিয়নের ডিলার মোঃ জহির চৌকিদার এবং জয়নগর ইউনিয়নের ডিলার সানাল মিয়ার সাথে আলাপ কালে তারা বলেন, জাজিরা খাদ্য গুদামে চাল উঠাতে গেলে খাদ্য গুদামের উপ খাদ্য পরিদর্শক মোঃ বুলবুল হাসান ৫০ কেজির বস্তাকে ৫১ কেজি ধরতে বলেন। তা না হলে তিনি চাল দিবেন না। তাই বাধ্য হয়ে ৫০ কেজির বস্তাকে ৫১ কেজি ধরে আনতে হয়। তারপর চাল গুদামে এনে মাপার পর দেখি ৫০ কেজির বস্তায় ৫০ কেজি নেই। আছে ৪৮ কেজি। তখন আমরা বাধ্য হই গ্রাহকদেরকে চাল কম দিতে। খাদ্য গুদামের উপ খাদ্য পরিদর্শক বুলবুল হাসানের আচরণে আমরা অতিষ্ঠ। তার হাত থেকে আমরা মুক্তি চাই। জাজিরা উপজেলা খাদ্য গুদামের উপ খাদ্য পরিদর্শক এবং ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ বুলবুল হাসানের সাথে আলাপ কালে তিনি বলেন, ওজন মাপার সময় আধা কেজি বেশী ধরা হয় এ কথা সত্য। কিন্তু চাল কম দেয়া হয় না।
জাজিরা খাদ্য গুদামের উপ খাদ্য পরিদর্শকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ
এপ্রিল ২২, ২০১৮ , ২২:২৫
আপনার মন্তব্য