শাকিল আহমেদ
শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ইরি আবাদে বাম্পার ফলন হয়েছে। সেই ফলনে কৃষকের চোখে ছিলো হাসির ঝিলিক। কিন্তু এক সপ্তাহের টানা বৃষ্টির কারণে মাঠের পাকা ধান পানিতে ডুবে গেছে। কৃষকের হাসির ঝিলিক এখন দুঃখে পরিণত হয়েছে। পানিতে ধান ডুবে যাওয়ার সাথে সাথে তাদের স্বপ্নও ডুবে গেছে। সখিপুর ইউনিয়নের বাহাউদ্দিন মুন্সির কান্দি ও আনু সরকার কান্দি গ্রামে মাঠের পাকা ধান বৃষ্টির পানিতে ডুবে যাওয়ায় সেখানকার প্রায় ৪শ কৃষক হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছে। এমতাবস্থায় জলাবদ্ধতা নিরসনে পাশের পরিত্যাক্ত খাল খননসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছে এলাকাবাসী। স্থানীয় বাসিন্দা জাহাঙ্গীর বেপারীর সাথে আলাপ করে জানা গেছে, সখিপুর ইউনিয়নের বাহাউদ্দিন মুন্সি কান্দি গ্রামে ৪টি বিলের প্রায় ১শ ৫০ একর জমিতে ইরি ধান চাষ করা হয়। আর ঐ ইরি ধানের উপর নির্ভর করে স্থানীয় প্রায় ২শ ৫০ জন কৃষক তাদের জীবিকা নির্বাহ করে। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও ঐ সব জমিতে ইরি ধানের চাষ করেছিল কৃষকরা। আর ফলনও হয়েছিল ভালো। কিন্তু টানা বর্ষণের কারণে পানি সরতে না পারায় ধান গুলো ডুবে গেছে। আর এতো কষ্টের ফসল ঘরে তুলতে না পারায় হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছে কৃষকরা। স্থানীয় কৃষক মনির হোসেন ও দ্বীন ইসলাম মিয়া বলেন, পাশের একটি খাল খননের অভাবে প্রতি বছর ক্ষেতে পানি জমে আমাদের ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এখন ধান পানির নিচে থাকায় আমরা কাঁটতে পারছিনা। ধান ঘরে তুলতে না পারলে আমরা শেষ হয়ে যাবো। এ দিকে টানা বর্ষণের ফলে সখিপুর ইউনিয়নের আনু সরকার কান্দির গ্রামের প্রায় ১শ ৫০ কৃষকের ইরি ধান পানিতে ডুবে গেছে। স্থানীয় ইউপি সদস্য আফজাল পেদার সাথে আলাপ করে জানা গেছে, সেখান থেকে জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য উপজেলা প্রশাসন থেকে একাধিকবার উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অবহেলার কারণে তা করা হয়নি। ফলে প্রতি বছরই মাঠের ফসল হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে সেখানকার কৃষকরা। স্থানীয় কৃষক আয়নাল গাজী ও আলী চৌধুরী বলেন, অফিসারেরা ড্রেন খনন করবে বলে আর করছে না। আর প্রতি বছর আমাদের পাকা ধান পানিতে ডুবে যাচ্ছে। সখিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান মানিক সরদার বলেন, খাল খনন ও ড্রেন সংযোগের অভাবে প্রতি বছরই আমার ইউনিয়নের কয়েকশ কৃষক ফসল হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্টদের কাছে আমার আকুল আবেদন এসব কৃষকদের কথা চিন্তা করে অতিদ্রুত যেন পাশের খাল গুলো খনন অথবা ড্রেন সংযোগের ব্যবস্থা করা হয়। ভেদরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আমি অনেক বার ঐ সব এলাকা পরিদর্শন করেছি। উপজেলা পরিষদের মিটিংয়ে অনেক বার উপস্থাপন করেছি। এসব জলবদ্ধতা নিরসনে অতিদ্রুত পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন। এ বিষয়ে ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাব্বির আহমেদ বলেন, ঐ এলাকা গুলো আমি পরিদর্শন করেছি। জলবদ্ধতা নিরসনে অতিদ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
টানা বর্ষণে পাকা ধান এখন পানির নীচে, স্বপ্নচারীদের স্বপ্নভঙ্গ
মে ২৭, ২০১৮ , ২২:৪৩
আপনার মন্তব্য