
স্টাফ রিপোর্টার
শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ভোজেশ্বর পুলিশ ফাঁড়ির কনস্টেবল তরিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে এক ব্যাক্তির পকেটে ইয়াবা দিয়ে চাঁদাবাজি করার অভিযোগ উঠেছে।
রোববার বিকেলে নড়িয়া উপজেলার ফতেজঙ্গপুর বাজারে কনস্টেবল তরিকুল ইসলাম এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। আর এ ঘটনার দায়ে তাকে পুলিশ লাইনে ক্লোজড করে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া প্রক্রিয়া চলছে।
অপরদিকে পুলিশের সোর্স শাহাদাত হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়েছে জানিয়েছেন ভোজেশ্বর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এস আই মোঃ আবুল কালাম আজাদ।
চামটা ইউনিয়নের তেলীপাড়া গ্রামের ভুক্তভোগী সুলতান শেখ ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, সুলতান শেখ তার মেয়েকে নিয়ে গোলার বাজার থেকে বাজার করে রিক্সাযোগে তেলীপাড়ার বাড়ীতে ফিরছিলেন।
রিকশাটি কিছুদূর যাওয়ার পর পথিমধ্যে পুলিশের সোর্স শাহাদাত হোসেন সুলতান শেখকের রিকশার গতিরোধ করে ১শ টাকা চেয়ে সুলতান শেখের পকেটে হাত দেয়। পকেটে হাত দিয়েই বলে আপনার পকেটে ইয়াবা আছে। এ সময় পাশে দাড়িয়ে ছিল ভোজেশ্বর পুলিশ ফাঁড়ির কনষ্টেবল তরিকুল ইসলাম।
তখন কনস্টেবল তরিকুল ইসলাম সুলতান শেখের হাতে হ্যান্ডকাপ পড়িয়ে ফতেজঙ্গপুর বাজারের পরিত্যক্ত একটি ভাঙ্গারির দোকানে নিয়ে যায়। সেখানে তার কাছে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করে। অবস্থা বেগতিক দেখে সুলতানের ছোট মেয়েকে একটি গাড়িতে করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়। এরপর কনস্টেবল তরিকুল ইসলামের হাত থেকে মুক্তির জন্য সুলতান শেখ তার স্ত্রী খুকু মনি বেগমকে মোবাইল করে ২০ হাজার টাকা নিয়ে আসতে বলে।
স্ত্রী খুকু মনি বেগম নিজের কানের দুল বন্ধক রেখে সাত হাজার টাকা নিয়ে আসেন। স্থানীয়রা ব্যাপারটি আঁচ করতে পেরে ঐ পুলিশ সদস্য তারিকুল ইসলামকে আটক করে নড়িয়া থানা ও ভোজেশ্বর ফাড়িতে খবর দেয়। খবর পেয়ে নড়িয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ সদস্য তরিকুল ইসলামকে বিচারের আশ্বাস দিয়ে জনতার হাত থেকে উদ্ধার করে এবং সোর্স শাহাদাত হোসেনকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে।
এ ব্যাপারে সুলতান শেখের স্ত্রী খুকু মনি বেগম বলেন, পুিলশ অন্যায় ভাবে আমার স্বামীকে আটক করে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করে। আমি অনেক চেষ্টা করে ৭ সাত হাজার টাকা দিয়ে আমার স্বামীকে ছাড়িয়ে আনি। পরে ফতেজঙ্গপুর বাজারের লোকজন জানতে পেরে পুলিশ সদস্যকে আটক করে নড়িয়া থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
এ ব্যাপারে কনস্টেবল তরিকুল ইসলামের নম্বরে বার বার ফোন দিলে এক মহিলা ফোন ধরে কেটে দেয়।
ভোজেশ্বর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এস. আই মোঃ আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমরা খবর পাওয়ার সাথে সাথে ঘটনাস্থলে গিয়ে তারকুলকে উদ্ধার করি এবং শাহাদাতকে গ্রেফতার করেছি। এ ঘটনাটি উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি। কনস্টেবল তরিকুলকে ক্লোজড করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ হাফিজুর রহমান বলেন, স্থানীয় পুলিশের সোর্স মোঃ শাহাদাত হোসেন পথচারী সুলতান শেখের নিকট থেকে পুলিশের নাম করে চাদাঁবাজী করেছে। পরে ভোজেশ্বর ফাঁড়ির কনষ্টেবল তরিকুল ইসলাম গিয়ে সোর্সের পক্ষ নেয়। এ কারণে পুলিশের কনষ্টেবল তরিকুল ইসলামকে পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করা হয়েছে। পাশাপাশি কনেষ্টেবলের বিরুদ্ধে বিভাগীর ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে এবং সোর্সকে আটক করা হয়েছে।
নড়িয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এম.এম মিজানুর রহমান বলেন, শাহাদাত হোসেন নামে এক ইয়াবা ব্যবসায়ী ফোন করে কনস্টেল তরিকুল ইসলামকে বলে একজন ইয়াবা ব্যবসায়ীকে আটক করেছি। আপনি আসেন। সেখানে তরিকুল গিয়ে দেখে শাহাদাতই ব্যবসায়ী। এ কারণে শাহাদাতকে আটক করে। তরিকুল ফাঁড়ির ইনচার্জকে না জানিয়ে যাওয়ার কারণে ক্লোজ করা হয়েছে।
আপনার মন্তব্য