শরীয়তপুর প্রতিনিধি
শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার বাঁশতলা গ্রামের বসতঘর থেকে মনি মালা (২৮) নামে এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ১ জুন সকাল সাড়ে ৮টায় ঐ গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
অভিযোগ উঠেছে স্বামী জসিম বেপারী (৩৪) পারিবারিক কলহের জের ধরে তার স্ত্রী মনি মালাকে হাত পা বেঁধে স্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। নিহত মনি মালা নড়িয়া পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের সোনার বাজার খলিফা কান্দি গ্রামের বাসিন্দা মোঃ ইয়ার বক্স সরদারের মেয়ে।
পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
নড়িয়া থানা পুলিশ ও নিহত মনি মালার ভাই জাহাঙ্গীর সরদারের সাথে আলাপ কালে জানা যায়, ২০০৮ সালে নড়িয়া উপজেলার সাহেবের চর গ্রামের আবেদ আলী বেপারীর ছেলে জসিম বেপারীর সাথে একই উপজেলার সোনার বাজার খলিফা কান্দি গ্রামের ইয়ার বক্স সরদারের মেয়ে মনি মালার প্রেম করে বিয়ে হয়। বিবাহিত জীবনে তাদের ঘরে দুইটি সন্তান রয়েছে। তারা হলেন শাহাদাত হোসেন (৮) এবং মহিউদ্দিন (৬)। বিবাহিত জীবনে জসিম বেপারীর এবং মনি মালা সুখী ছিলেন না।
বিয়ের পর থেকেই যৌতুকসহ পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মনি মালার উপর শারীরিক ও মনসিক নির্যাতন করতো জসিম বেপারী। পদ্মার ভাঙ্গনে জসিম বেপারীর বাড়ি ঘর নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেলে এক বছর যাবৎ উপজেলার বাঁশতলা এলাকায় জমি ভারা নিয়ে বসবাস করছিলেন। বৃহস্পতিবার রাতে মনি মালা ও তার স্বামী জসিম বেপারীর সঙ্গে পারিবারিক বিষয় নিয়ে ঝগড়া হয়। শিশুরা ঘুমিয়ে পরলে মনি মালার হাত পা বেঁধে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে জসিম। পরে জসিম ঐ রাতেই পালিয়ে যায়। পরের দিন শুক্রবার সকালে শিশুরা ঘুম থেকে উঠে মেঝেতে মায়ের লাশ পরে থাকতে দেখে কান্না শুরু করে। তখন প্রতিবেশীরা ছুটে এসে হাত পা বাঁধা অবস্থায় ঘরের মেঝেতে মনি মালার মরদেহ পরে থাকতে দেখে তারা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় নড়িয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
নিহতের বড় বোন মর্জিনা বেগম বলেন, জসিম প্রেমের সম্পর্ক করে আমার বোনকে বিয়ে করে। বিয়ের পর থেকেই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মনি মালাকে মারধর করতো। একাধিক বার সমাজের মুরব্বিরা মিমাংশা করে দিয়েছে। জসিম আমার বোনকে নির্মম ভাবে হত্যা করেছে। আমরা এ হত্যাকারীর বিচার চাই।
নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আসলাম উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে হাত পা বাঁধা অবস্থায় মনিমালা নামে একজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে। মরদেহের সুরতহাল শেষে ময়না তদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। স্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে একটি হত্যা মামলা দায়েরর প্রস্তুতি চলছে।
আপনার মন্তব্য