স্টাফ রিপোর্টার
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী দেশে বিরাজমান স্বাভাবিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে নিষ্ঠা, পেশাদারিত্ব ও সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের জন্য পুলিশ সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, সবার আন্তরিক সহযোগিতায় আমরা নিরাপদ বাংলাদেশ গঠন করতে সক্ষম হব।
পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স সম্মেলন কক্ষে ‘পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স কোয়ার্টারলি কনফারেন্স’ এ সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। দিনব্যাপী এ কনফারেন্সে সব পুলিশ কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি ও পুলিশ সুপারগণ উপস্থিত ছিলেন।
কনফারেন্সে ২০১৭ সালের ৪র্থ কোয়ার্টারের (অক্টোবর-ডিসেম্বর ২০১৭) অপরাধ বিষয় পর্যালোচনাসহ অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
আইজিপি বলেন, জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ পুলিশের অনন্য অবদান রয়েছে। বর্তমানে দেশে জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে আছে। জঙ্গিরা যেন মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে সেজন্য সবাইকে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। জঙ্গিবিরোধী কার্যক্রম আরও জোরদার করতে হবে।
পুলিশ প্রধান বলেন, মাদক নিয়ন্ত্রণ আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে মাদক নিয়ন্ত্রণে কাজ করার জন্য তিনি মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও আন্তরিক সহযোগিতায় আমরা মাদক নিয়ন্ত্রণে সক্ষম হব।
তিনি বলেন, কোন সাধারণ ও নিরীহ মানুষ যেন হয়রানির শিকার না হয় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। থানাকে পুলিশি সেবা প্রদানের অন্যতম কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। মানুষের সাথে ভাল আচরণ করতে হবে, তাদের সমস্যা ও অভাব অভিযোগ শুনতে হবে।
আইজিপি বলেন, আসন্ন কনস্টেবল নিয়োগে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে হবে। যাতে এ নিয়োগ নিয়ে কোন ধরণের অভিযোগ উত্থাপিত না হয়। তিনি বলেন, সবাই মিলে চেষ্টা করলে আমরা সুষ্ঠুভাবে কনস্টেবল নিয়োগ সম্পন্ন করতে পারবো।
ড. জাবেদ পাটোয়ারী বাংলাদেশ পুলিশকে একটি সুশৃঙ্খল বাহিনী হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, কোন সদস্যের ব্যক্তিগত অপরাধের দায়ভার প্রতিষ্ঠান বহন করবে না। কোন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে কোন ব্যক্তিগত অপরাধের অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাকে কোন ছাড় দেওয়া হবে না।
সভায় অক্টোবর-ডিসেম্বর ২০১৭ কোয়ার্টারের সার্বিক অপরাধ পরিস্থিতি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। সভায় অপহরণ, খুন, ডাকাতি, ছিনতাই, এসিড নিক্ষেপ, ধর্ষণ, নারী ও শিশু নির্যাতন, মাদকদ্রব্য, চোরাচালান দ্রব্য, অস্ত্র ও বিষ্ফোরক উদ্ধার, সড়ক দুর্ঘটনা, গাড়ি চুরি, রাজনৈতিক সহিংসতা, অপমৃত্যু, পুলিশ আক্রান্ত মামলাসহ আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয়। পর্যালোচনায় দেখা যায়, আলোচ্য সময়ে সারাদেশে ৫২ হাজার ৪৪৬টি মামলা রুজু হয়েছে, যা গত জুলাই-সেপ্টেম্বর ২০১৭ সময়ের তুলনায় কমেছে। আলোচ্য সময়ে সারাদেশে খুন, নারী ও শিশু নির্যাতন, চোরাচালান, সড়ক দুর্ঘটনা, গাড়ি চুরির মামলা গত কোয়ার্টারের তুলনায় কমেছে। আলোচ্য সময়ে ডাকাতি মামলা বৃদ্ধি পেয়েছে।
সভায় অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন ও অপারেশনস্) মো. মোখলেসুর রহমান, পুলিশ স্টাফ কলেজের রেক্টর অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান, সিআইডির অতিরিক্ত আইজিপি শেখ হিমায়েত হোসেন, পুলিশ একাডেমির প্রিন্সিপ্যাল মোহাম্মদ নাজিবুর রহমান, র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ, এপিবিএনের অতিরিক্ত আইজিপি সিদ্দিকুর রহমান, রেলওয়ের অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আবুল কাশেম, ডিএমপির পুলিশ কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া, অতিরিক্ত আইজিপি মো. মইনুর রহমান চৌধুরী, শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি আবদুস সালাম, এসবির অতিরিক্ত আইজিপি মীর শহিদুল ইসলাম, অতিরিক্ত আইজিপি মো. মহসিন হোসেন, এন্টি টেরোরিজম ইউনিটের অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম এবং ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আপনার মন্তব্য