
স্টাফ রিপোর্টার
শরীয়তপুরের কাগদী দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক মাওলানা ছগির হোসেনের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলা এবং সরকারী টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, তিনি ছুটি না নিয়েই ৪০দিনের জন্য ফারিহা ওভারসীজের পক্ষে হজ্জ যাত্রীদের মোয়াল্লেম সেজে মক্কা নগরীতে চলে গেছেন। মক্কা থেকে এসে এখন তিনি উক্ত ৪০দিনের বেতনের টাকা উত্তোলনের পায়তারা করছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাওলানা ছগির হোসেন কাগদী দাখিল মাদ্রাসার একজন সহকারী শিক্ষক। শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি ফারিহা ওভারসীজের মোয়াল্লেম হিসেবে কাজ করেন। আর এই মোয়াল্লেমের কাজ করতে গিয়ে তিনি দায়িত্বে অবহেলা সহ সরকারী টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
কাগদী দাখিল মাদ্রাসা সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালে কোন ছুটি ছাড়াই শুধু মাত্র একটি দরখাস্ত সুপারের কাছে জমা রেখে সহকারী শিক্ষক মাওলানা ছগির হোসেন ফারিহা ওভারসীজের পক্ষে হজ্জ যাত্রীদের নিয়ে মক্কা চলে যান। ৪০দিন পর মক্কা থেকে এসে তিনি মাদ্রাসায় যোগদান করেন। মাদ্রাসায় যোগদানের পর তিনি ঐ ৪০ দিনের টাকা উত্তোলন করেন।
সরকারী বিধি মোতাবেক একজন সহকারী শিক্ষক একসাথে ৪০দিনের ছুটি নিতে পারেন না। ছুটি নিতে হলে মেনেজিং কমিটির অনুমোদন প্রয়োজন হয়। কিন্তু মাওলানা ছগির হোসেন মেনেজিং কমিটির অনুমোদন ছাড়াই ৪০দিন মক্কায় অবস্থান করেছেন। সরকারী বিধি মোতাবেক একজন সহকারী শিক্ষক দীর্ঘদিন ছুটিতে থাকলে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা জন্য অস্থায়ী ভাবে একজন শিক্ষক নিয়োগ দিবেন। কিন্তু ছগির হোসেন কোন অস্থায়ী শিক্ষকের ব্যবস্থা করে না যাওয়ায় শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। পাশাপাশি তিনি অবৈধভাবে ৪০দিনের টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন। কি এক অদৃশ্য কারণে ছগির হোসেনের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি মেনেজিং কমিটি।
একই ভাবে ২০১৯ সালে ছগির হোসেন হজ্জ যাত্রীদের নিয়ে মক্কা চলে যান এবং ৪০দিন পর পুণরায় মাদ্রাসায় যোগদান করেছেন। ৪০দিন মাদ্রাসায় অনুপস্থিত থেকে এখন তিনি ৪০দিনের বেতন তোলায় পায়তারা করছেন। মেনেজিং কমিটির অনুমোদন ছাড়াই ছগির হোসেন কোন খুটির জোড়ে পর পর দুইবারে ৮০দিন মক্কা নগরীতে কাটিয়ে আসলেন এবং এসেই ৮০ দিনের বেতন ভাতাদি তুলে নিলেন তা জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
এ ব্যাপারে কাগদী দাখিল মাদ্রাসার সুপার মোঃ কামরুজ্জামানের সাথে আলাপ কালে তিনি বলেন, “সহকারী শিক্ষক মাওলানা ছগির হোসেন হজ্জ কাফেলা নিয়ে মক্কা যাওয়ার আগে আমার কাছে একটি দরখাস্ত জমা দিয়েছেন। দরখাস্তে তার ছুটি মঞ্জুর করা হয়নি। দীর্ঘদিনের ছুটি মঞ্জুর করার এখতিয়ার আমার নেই। দীর্ঘদিনের ছুটি মঞ্জুর করবেন মেনেজিং কমিটি। পারবর্তী মিটিংয়ে তার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে”।
এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ এমারত হোসেনের সাথে আলাপ কালে তিনি বলেন, একজন শিক্ষক বছরে ছুটি পান ১৮দিন। সহকারী শিক্ষক মাওলানা ছগির হোসেন কোন কারণ ছাড়া ৪০দিন কিভাবে মক্কা নগরীতে কাটিয়ে আসলেন তা আমার বোধগম্য নয়। বেসরকারী মাদ্রাসার সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী হচ্ছে মেনেজিং কমিটি। মেনেজিং কমিটি ইচ্ছে করলেই এতো দীর্ঘদিনের ছুটি দিতে পারেন না। যদি দীর্ঘ ছুটি নিতে হয় তাহলে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য মেনেজিং কমিটি তার স্থলে একজন অস্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ দিবেন। যাতে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত না হয়।
এ ব্যাপারে কাগদী দাখিল মাদ্রাসার মেনেজিং কমিটির সভাপতি বি.এম ইউসুফ আলীর সাথে আলাপ করতে চাইলে তার মুঠোফোনে কল দেয়া হয়। মুঠোফোনে কল ঢুকেছে। কিন্তু তিনি কলটি রিসিভ করেননি। যার কারণে তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
আপনার মন্তব্য