
স্টাফ রিপোর্টার
ট্রলিচাপায় নিহত মিথিলার জীবনের মূল্য মাত্র ২লাখ ৬০ হাজার টাকা। ট্রলির মালিক ছাত্তার মালত এক আপোষ মীমাংসার মাধ্যমে ২লাখ ৬০ হাজার টাকা বুঝিয়ে দিয়েছেন নিহত মিথিলার পরিবারকে।
২৭ মার্চ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় ঘড়িসার ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের এক কক্ষে মিথিলার মা লিপি বেগমের সাথে এক আপোষ মীমাংসার মাধ্যমে এ টাকা বুঝিয়ে দেয়া হয়।
এতে এলাকাবাসীর মনে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। এলাকাবাসীর দাবি, এভাবে জীবনের মূল্য নির্ধারণ করা হলে দুর্ঘটনাকারীরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিহত মিথিলা শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার ঘড়িসার ইউনিয়নের বারৈপাড়া গ্রামের মোবারক হাওলাদারের মেয়ে। সে আটপাড়া ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রি-প্রাথমিক শিশু শ্রেণির ছাত্রী ছিল।
গত ১৬ মার্চ সকাল ৮টার দিকে মা লিপি বেগমের হাত ধরে ঘড়িসার বারৈপাড়া সড়ক দিয়ে হেঁটে স্কুলে যাচ্ছিল মিথিলা। হঠাৎ মায়ের হাত ছেড়ে সড়কের মাঝে চলে গেলে একটি ট্রলি এসে মিথিলাকে চাপা দেয়। আহত অবস্থায় মিথিলাকে ঘড়িসার আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক ভাবে ট্রলিটি জব্দ করে ভাংচুর এবং চালক শাহ আলমকে আটক করে নড়িয়া পুলিশের কাছে সোপর্দ করে এলাকাবাসী। কিন্তু এলাকায় উত্তপ্ত অবস্থা বিরাজ করায় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
দুর্ঘটনার দিনই মিথিলার চাচা রূবেল হাওলাদার বাদী হয়ে নড়িয়া থানায় একটি মামলা করেন। সাথে সাথে মামলার আসামি ট্রলিচালক শাহ আলম মোল্লাকে শরীয়তপুর জেল হাজতে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন নড়িয়া থানার পুলিশ। গত ২৪ মার্চ শাহ আলম জেল থেকে জামিনে বের হন।
পরে ২৭ মার্চ বুধবার দুপুর ১২টার দিকে ঘড়িসার ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের একটি কক্ষে বসে মিথিলার মা লিপি বেগম, ট্রলির মালিক ছাত্তার মালত এবং চালক শাহ আলম মোল্লাকে নিয়ে স্থানীয় সালিশের মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসা করেন।
সেই সালিশে ঘড়িসার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুর রব খান, ঘড়িসার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এম. এ আকবর হাওলাদার, সাধারণ সম্পাদক লিয়াকত হোসেন মুন্সীসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে নিহত মিথিলার মা লিপি বেগম জানান, মামলা করেছি, কিন্তু আসামি জামিনে চলে এসেছে। মামলা করে লাভ হলো না। তাই আপোস হয়েছি। এ বিষয়ে আর কিছু বলার নেই।
নড়িয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ.কেএম মঞ্জুরুল হক আকন্দ বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত মিথিলার চাচা থানায় মামলা করেছিলেন। তারই প্রেক্ষিতে আসামী শাহ আলমকে গ্রেফতার করে কোর্টে চালান করা হয়েছে। পরে তাদের সাথে মীমাংসা হয়েছে কি না জানি না।
আপনার মন্তব্য