
জান্নাতুল শাহানাজ
যম দূতের সাথে যুদ্ধ করে এ যাত্রায় বেঁচে উঠেছেন দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি কাজী নজরুল ইসলাম।
১৪ আগষ্ট বুধবার রাত সাড়ে ৭টায় তিনি হঠাৎ করে গুরুতর অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাৎক্ষণিক ভাবে তাকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সাংবাদিক নজরুল ইসলামে অসুস্থ্যতার সংবাদ শুনে শরীয়তপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন অপু সহ জেলায় কর্মরত সকল সাংবাদিকরা হাসপাতালে ছুটে আসেন।
প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, হাসপাতালের জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাজীব শিকদার তাকে খুবই গুরুত্বের সাথে পর্যবেক্ষণ করছিলেন। তার নিবিড় পর্যবেক্ষণের কারণে তিনি দ্রুত আরগ্য লাভ করেছেন।
এ ব্যাপারে সাংবাদিক কাজী নজরুল ইসলামের সাথে আলাপ কালে তিনি বলেন, “মৃত্যুর দুয়ার থেকে আরেকবার রাব্বুল আলামীন আমাকে ফিরিয়ে জীবন ভিক্ষা দিলেন। পরম করুনাময়ের কাছে অশেষ শুকরিয়া আদায় করছি।
গতকাল ১৪ আগষ্ট সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার পর থেকেই হঠাৎ অসুস্থ্য বোধ করতে থাকি। আমার প্রাণপ্রিয় নেতা ইকবাল হোসোন অপু ভাই চৌরঙ্গীস্থ তার ব্যক্তিগত কার্যালয়ে বসে সকল স্তরের নেতা-কর্মীদের নিয়ে শোক দিবস পালনের প্রস্তুতি সভা করছিলেন। সেই সভায় আমিও ছিলাম। অপু ভাই বক্তৃতা দিচ্ছিলেন। মন্ত্রমুগ্ধের মত বক্তৃতা শুনছিলাম। ভুলেই গিয়েছিলাম নিজের অসুস্থ্যতার কথা। প্রায় ১৫ মিনিটের বক্তৃতা শোনার পর নিজেকে আর ধরে রাখতে পারছিলাম না।
মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলাম, হাসপাতালে যাব। সামনে একটু এগুতেই ডেন্টিষ্ট এল.কে শিমুলের সাথে দেখা হলো। ওকে অনুরোধ করতেই আমার ব্লাড প্রেসারটি মেপে দিলেন। ১৩০/৯০ যা বরাবরের তুলনায় একটু বেশী। কিন্তু শরীরে অস্থিরতা বেড়েই চলছিল। ওখান থেকে উঠে হাসপাতালের দিকে রওয়ানা হই। কিন্তু পা চলছিল না। চোখে অন্ধকার দেখছিলাম। শরীর অবশ হয়ে আসছিল। সামনেই দেখি আমার স্নেহভাজন বুড়ির হাটের পিন্টু মোল্যাকে। ওর সাহায্য চাই। পিন্টু আমার আরেক ছোট ভাই আটংয়ের স্বপন খানকে ডেকে ওর মটর বাইকে করে আমাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে জরুরী বিভাগে ভর্তি করে। আমার শরীর থেকে ততক্ষণে অঝোরে ঘাম ঝরছিল। হাতে-পায়ে খিঁচুনি আর কাঁপুনিতে আমার জীবন তখন ওষ্ঠাগত”।
তিনি বলেন, “জরুরী বিভাগের তরুণ চিকিৎসক রাজীব শিকদার খুবই গুরুত্বের সাথে আমাকে পর্যবেক্ষণ করছিলেন। তিনি জানালেন, আমার সুগার নেমে গিয়ে হাইফো উঠেছে। দ্রুত চিকৎসা শুরু করা না গেলে দুর্ঘটনা অবসম্ভাবী”।
তিনি আরও বলেন, “এ সময় খবর পেয়ে হাসপাতালের জরুরী বিভাগে ছুটে আসে আমার আরেক স্নেহধন্য জেলা স্বেচ্ছা সেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক তাইজুল সরকার, আমার দীর্ঘ দিনের সহকর্মী রশীদ, ভাতিজা ইকবাল হাওলাদার, চিতলিয়ার সুমন এবং আমার ভাতিজা কাজী কামাল আমাকে মুহুর্তের মধ্যে স্ট্রেচারে করে তিন তলার একটা সিটে শুইয়ে দেয়।
আমার অসুস্থ্যতার খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে আসেন আমার পরম প্রিয় নেতা শরীয়তপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন অপু ভাই। তার সাথে আসেন জেলা আওয়ামীলীগ নেতা এ্যাডভোকেট আলমগীর হোসেন মুন্সী, জেলা যুবলীগের সাধারণ সস্পাদক নুহুন মাদবর, আওয়ামীলীগের উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক মোজাফ্ফর হোসেন জমাদ্দার, আমার বন্ধু গোলাম মোস্তফা, ভিপি সালাম, আওয়ামীলীগ নেতা হারুন হাওলাদার, আমার বন্ধু ভিপি ইসহাক মাদবর, সদর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি বিল্লাল হোসেন দিপু মিয়া, যুবনেতা জামাল ফকির, এ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান জুয়েল, এ্যাডভোকেট মুরাদ হোসেন মুন্সী, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম শরীয়তপুর জেলা শাখার সভাপতি এম.এ ওয়াদুদ মিয়া, সাধারণ সম্পাদক বি.এম ইশ্রাফিল, সাংবাদিক রোকোনুজ্জামান পারভেজ, সাংবাদিক নুরুল আমিন রবীন, সাংবাদিক কাওসার, সাংবাদিক বেলাল হোসাইন সহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ।
আমি বিশেষ করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ মোঃ আবদুল্লাহ স্যার এবং মেডিক্যাল অফিসার রাজীব শিকদারের কাছে চির কৃতজ্ঞ। সকলের দোয়ায় আমি এখন কিছুটা সুস্থ্য”।
এ ব্যাপারে চিকিৎসক রাজীব শিকদারের সাথে আলাপ কালে তিনি বলেন, সাংবাদিক নজরুল ইসলামের ব্লাডের সুগার নেমে গিয়ে হাইফো হয়েছিলো। তাৎক্ষণিক ভাবে যদি তার রোগ নির্ণয় করা না যেতো তাহলে দুর্ঘটনা অবসম্ভাবী। আমি আন্তরিকভাবে চেষ্টা করেছি।
আপনার মন্তব্য