
এই দেশের একজন সায়েমার ছবি ভাইরাল করে আদৌ কোন লাভ আছে কি ? কী হবে এসব ভাইরাল করে ? বড়জোর তাকে ওএসডি করে রাখা হবে। তারপর ? তারপর কী হবে ? দেশের সব “সিস্টেম লস” সিস্টেমের মধ্যে চলে আসবে ?
না, আসবে না। কিচ্ছু ভালো হবে না এখানে। এমন আরো অনেক অনেক সায়েমা দিয়ে এই রাষ্ট্রযন্ত্রের নির্বাহী ও বিচার বিভাগ পরিচালিত হয়। আইন বিভাগের কথা আর না-ই বা বললাম। তাই সবার আগে বিসমিল্লাহ’র গলদটা সারাতে হবে।
অমার প্রশ্ন, রাষ্ট্র কোন নাগরিককে অসম্মান করার অধিকার রাখে কি ? পুলিশ ফেইসবুকে “টসে জিতে ব্যাটিং করতে নেমেছে পুলিশ” ঘোষণা দিয়ে রাস্তায় ‘পাব্লিক’ ধরে ধরে পেটাবে; রাষ্ট্রের একজন সাধারণ কর্মচারী হয়ে যে নাগরিকের টাকায় তার বেতন হয়, সেই নাগরিককে কান ধরে ওঠবস করাবে, সেই ছবি তুলে সরকারি ওয়েবসাইটের কাভারফটো বানাবে, এত বড় সাহস এই বেতনভূক কর্মচারী পায় কোথায় ?
উত্তর খুব সোজা, রাষ্ট্র সাহস দিচ্ছে।
আর এদিকে একজন নিম্ন আয়ের মানুষ বাইরে বের হতে না পারার কারণে কাজ পাচ্ছে না, খাবার পাচ্ছে না, এই দায়ভার কে নেবে ? রাষ্ট্র এই আপৎকালীন মুহূর্তে তার নিম্নবিত্ত শ্রেণীর নাগরিকদের নাগরিক সেবা এবং সুবিধা দিতে পারছে কি ? এই দায়ভার কার ? একজন নাগরিক যদি ক্ষুধার জ্বালা সহ্য করতে না পেরে, সন্তানের মুখে খাবার তুলে দিতে না পেরে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয়, সে দায়ভার কে নেবে ?
এসব প্রশ্নের উত্তরও সোজা-রাষ্ট্রকেই দায়ভার নিতে হবে।
কিন্তু আমি জানি এবং আপনারাও জানেন এই রাষ্ট্রব্যবস্থায় নাগরিকের দায়ভার তার রাষ্ট্রের উপর ‘কাগজে-কলমে’ বর্তালেও, বাস্তবে বর্তায় না।
তবুও রাষ্ট্রের একজন নাগরিক হয়ে আমি যদি এই অপমানের জন্যে, আত্মহত্যায় পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষ প্ররোচনা দেবার জন্যে রাষ্ট্রকে এবং রাষ্ট্রব্যবস্থাকে প্রশ্ন করি, একদল তখনও থাকবেন আমাকে জনগণের কর্তব্যবোধ সম্পর্কে জ্ঞান দানের জন্যে।
ভাই রে, বারবার বলছি-মূল সমস্যা এই রাষ্ট্র ব্যবস্থায়। মূল সমস্যা এই রাষ্ট্রযন্ত্রের নিয়ন্ত্রক ও পরিচালকদের মনস্তত্ত্বে। তাই রাষ্ট্রকে প্রশ্ন করতে হবে। এই রাষ্ট্রব্যবস্থাকে প্রশ্ন করতে হবে। নইলে কিছুই হবে না, কিচ্ছু না। সেক্ষেত্রে একান্ত প্রয়োজন রাষ্ট্রব্যবস্থার পরিবর্তন করা।
আপনার মন্তব্য