স্টাফ রিপোর্টার
ঢাকা মহানগরীতে সেপ্টেম্বর মাসব্যাপী বিশেষ ট্রাফিক সচেতনতামূলক কর্মসূচি পালন করা হবে বলে জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া।
এই লক্ষ্যে ঢাকা মহানগরীর অনিবদ্ধিত রিকশাগুলো জব্দ করা হবে এবং রাজধানীতে কোনো লেগুনা চলবে না বলেও জানান তিনি। তবে রাজধানীর উপকণ্ঠে যেমন—বছিলা, তিনশ ফিট, ডেমরা এলাকায় লেগুনা চলাচল করতে পারবে। একইসঙ্গে পাম্প থেকে বাইকের চালকদের হেলমেট ছাড়া তেল না দেওয়ারও নির্দেশ দেন কমিশনার।
মূলত ট্রাফিক আইনশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করা এবং যানজট নিরসনের উদ্দেশ্যে এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আছাদুজ্জামান।
৪ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান আছাদুজ্জামান মিয়া।
সড়কে লেগুনা চলাচলের বিষয়ে আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ‘রাজধানীতে কোনো লেগুনা চলবে না। কারণ লেগুনার কারণে সড়কে সবচেয়ে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়। সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণও এই লেগুনা। লেগুনার কোনো রুট পারমিট নেই। এতদিন যারা লেগুনা চালিয়েছেন, সব অবৈধভাবে চলছে। কারো কোনো আনুমতি নেই। তাই এখন থেকে আর কোনো লেগুনা চলবে না।’
ট্রাফিক সচেতনতামূলক কর্মসূচি সম্পর্কে কমিশনার বলেন, ‘এই বিশেষ ট্রাফিক কর্মসূচিতে ৩২২ জন রোভার স্কাউট সদস্য পুলিশের সাথে বিভিন্ন পয়েন্টে দায়িত্ব পালন করবে। ঢাকা মহানগরকে পরিচ্ছন্ন নগরী পর্যন্ত করতে এই বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।’
এ সময় বাস মালিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে কমিশনার বলেন, ‘ড্রাইভার নিয়োগের ক্ষেত্রে সকল কাগজপত্র পরীক্ষা করে ড্রাইভার নিয়োগ দিতে হবে এবং চুক্তিভিত্তিক কোনো ড্রাইভার রাখতে পারবে না। তাই সকল ড্রাইভারকে বেতনভুক্ত করতে হবে। যাতে অসুস্থ প্রতিযোগিতা না হয়।’
ড্রাইভারদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে কমিশনার বলেন, ‘১২১টা স্টপেজ দেওয়া হয়েছে। এই নির্দিষ্ট স্টপেজে ছাড়া যাত্রী ওঠা-নামা করাবেন না এবং স্টপেজ ছাড়া দরজা খোলা রাখবেন না।
গাড়িতে ফ্লিগাল লাইট, হাইড্রোলিক হর্ন, কালো গ্লাস ব্যবহার করবেন না এবং প্রতিটা বাস ড্রাইভারের সাথে তার মোবাইল নাম্বার ও ছবি গাড়িতে রাখতে হবে।’
সড়কে চলালচলকারী পথচারীদের উদ্দেশ্যে আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ‘জেব্রা ক্রসিং, ফুট ওভার ব্রিজ, আন্ডারপাস এবং ফুটপথ ছাড়া রাস্তা পারাপার হবেন না এবং চলাচল করবেন না। যদি এটা না মানেন তাহলে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আমাদের আইন না মানার যে সংস্কৃতি চালু রয়েছে। এটা পরিবর্তন আনতে হবে।’
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘নিজে আইন মানুন এবং অন্যকে আইন মানতে উৎসাহী করুন। না হলে ট্রাফিকের একার পক্ষে পরিচ্ছন্ন নগরী দেওয়া করা সম্ভব নয়। আর এই অব্যবস্থাপনা এক দিনে হয়নি। এটা দীর্ঘদিনের ফসল।’
ঢাকা মহানগরীর মডেল ট্রাফিক সিস্টেম এবং নিরাপদ সড়কের জন্য অনিবন্ধিত রিকশাগুলোও জব্দ করা হবে বলে জানান আছাদুজ্জামান মিয়া।
পেট্রোল পাম্প কর্তৃপক্ষ ও মোটরসাইকেল চালকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘ঢাকার প্রতিটি পেট্রোল পাম্প কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে হেলমেটবিহীন মোটরসাইকেলকে তেল না দিতে। আর কোনো মোটরসাইকেলে দুজনের বেশি ওঠা যাবে না এবং হেলমেটবিহীন কাউকে পেলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
আপনার মন্তব্য