ইলিয়াছ মাহমুদ
বেদে পল্লীর সাপুড়ে আসমাউল সরদারের মেয়ে রূপসী দারিদ্রের কারণে যখন পড়াশুনা ছেড়েই দেবে ভাবছিল ঠিক তখন তার পাশে এসে দাড়ালেন নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা ইয়াসমিন। রূপসী আক্তারের একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি, বই প্রদান এবং খন্ডকালীন অনুদানসহ মাসিক বৃত্তির ব্যবস্থা করেছেন তিনি। রূপসী এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় নড়িয়া লোনসিং উচ্চ বিদ্যালয়ে বাণিজ্য বিভাগ থেকে ৩ দশমিক ৩৯ পেয়ে পাস করেছে। দরিদ্র পরিবারের এই মেয়েটির পড়াশোনার দায়িত্ব নেয়ায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন রূপসীর বাবা-মা। রূপসীর মা রূপালী বেগম বলেন, ইউএনও মেয়ের পড়াশোনার দায়িত্ব নিজ হাতে না নিলে আমাদের পক্ষে সম্ভব হতো না মেয়েটিকে পড়াশোনা করানো। নড়িয়া উপজেলার ভূমখাড়া ইউনিয়নের চাকধ দিঘিরপাড় জামে মসজিদ সংলগ্ন নড়িয়া-চাকধ সড়কের পাশে ছোট একটি দোচালা ভাসমান টিনের ঘরে বসবাস করছে রূপসীর পরিবারের। রূপসীর মা জানান, তাদের বাড়ি ছিল বিক্রমপুরে। যতটুকু জমি ছিল তা পদ্মা নদী কেড়ে নিয়েছে। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় ২৫ বছর আগে এখানকার সরকারি জমিতে তারা বসবাস শুরু করেন। রূপসীর বাবা জেলায় বিভিন্ন জায়গায় সাপ খেলা দেখায়। সাপ ধরে যে অর্থ পান তা দিয়ে কোনো রকমে চলে তাদের সংসার। নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা ইয়াসমিন বলেন, অবহেলিত ও দরিদ্রদের বিভিন্ন সাহায্য সহযোগিতা করতে গিয়ে পরিচয় হয় রূপসীর পরিবারের সঙ্গে। জানতে পারি বেদে পল্লীর এই মেয়েটি লোনসিং উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীতে পড়ছে। দারিদ্রতার কারণে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ করতে পারছে না। তখন ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সাথে পরামর্শ কওে তার ফরম পূরণ করাই এবং এসএসসি পরীক্ষা দেয়ার জন্য বলি। শুনেছি সে পাস করেছে। খুব খুশি হয়েছি। রূপসী একাদশ শ্রেণীতে ভর্র্তির জন্য নড়িয়া সরকারি কলেজে আবেদন করেছে। আমি রূপসীর পড়াশোনার যাবতীয় ব্যয়ভার বহন করব। নড়িয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল খালেক বলেন, শুধুমাত্র আর্থিক বা শিক্ষা ক্ষেত্রে সহায়তা নয়, রূপসীর পাঠদানের ব্যাপারেও বিশেষ নজর দেয়া হবে।
রূপসীর পড়াশোনার দায়িত্ব নিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা
মে ২৮, ২০১৮ , ০০:০০
আপনার মন্তব্য