আবদুল বারেক ভূইয়া
শরীয়তপুর সদর উপজেলার চিকন্দী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের আবুড়া গ্রামে পল্লী বিদ্যুতের সংযোগ দেয়ার নামে মোটা অংকের টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। সেখানে ১৭০টি পরিবার থেকে ১হাজার টাকা করে চাঁদা আদায় করা হয়েছে। সরকার দেশের প্রতিটি গ্রামকে বিদ্যুতের আওতায় আনার জন্য বিনা খরচে বিদ্যুতের সংযোগ দেয়ার ঘোষনা দিলেও পল্লী বিদ্যুতের কতিপয় অসাদু কর্মকর্তা তাদের নির্দিষ্ট কিছু দালালের মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছ হতে মোটা অংকের চাঁদা আদায় করছে। আর চাঁদাবাজির মূল হোতারা রয়ে যাচ্ছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে।
চিকন্দী ইউনিয়নের আবুড়া গ্রামের নূর মোহাম্মদ মাদবর, লিজা বেগম, মাকসুদা বেগম, সিকজান বেগম, আলকেছ খান এবং ফরিদা বেগমের সাথে আলাপ কালে জানা যায়, আবড়া গ্রামের স্থানীয় প্রভাবশালী মোঃ শাহ আলম চোকদার, নান্নু মাদবর এবং হাজী মোছলেম মাদবর শরীয়তপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির প্রতিনিধি হিসেবে তাদের কাছে পরিচয় দেয় এবং তারা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার সোহরাব আলী বিশ্বাসের নির্দেশ ক্রমেই বিদ্যুৎ লাইনের জন্য ১হাজার টাকা চাঁদা তুলছেন বলে জানায়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চিকন্দী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের আবুড়া গ্রামের ১৭০ পরিবারকে বিদ্যুতের আওতায় আনার জন্য শরীয়তপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি একটি প্রকল্প হাতে নিয়ে ছিলেন। সেই প্রকল্প অনুসারে বিদ্যুতের লাইন টানার জন্য খুটি গাড়ার কাজ চলছে। আর এই খুটি গাড়ার নাম করে স্থানীয় প্রভাবশালী মোঃ শাহ আলম চোকদার, নান্নু মাদবর এবং হাজী মোছলেম মাদবর এলাকার ১৭০টি পরিবারের কাছ হতে ১ হাজার টাকা করে ১লক্ষ ৭০ ৭াজার টাকা উত্তোলন করেছেন। যা একটা বিশাল অংশ চলে গেছে শরীয়তপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার সোহরাব আলী বিশ্বাসের পকেটে। এদিকে চাঁদাবাজরা রয়ে যাচ্ছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। ফলে এলাকায় চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এ ব্যাপারে স্থানীয় নূর মোহাম্মদ মাদবর এবং আবদুর রহিম সরদারের সাথে আলাপ কালে তারা বলেন, নতুন বিদ্যুৎ লাইন এনে দেবার কথা বলে শাহ আলম চোকদার, নান্নু মাদবর এবং হাজী মোছলেম মাদবর আমাদের কাছে ১ হাজার টাকা চাঁদা নিয়েছে। আমরা তাদের কথা বিশ্বাস করে টাকা দিয়েছি।
এ ব্যাপারে চাঁদাবাজ মোঃ শাহ আলমের সাথে মুঠোফোনে আলাপ কালে তিনি বলেন, বিদ্যুতের লাইল এনে দেয়ার কথা বলে কিছু খরচ তোলা হয়েছে। কিন্তু এলাকাবাসী যে পরিমান টাকার কথা বলছে সে পরিমান টাকা তোলা হয়নি। আরেক চাঁদাবাজ হাজী মোছলেম মাদবর সাথে আলাপ কালে তিনি বলেন টাকা যা তোলার শাহ আলম তুলেছে। আমি কেবল টাকা তোলার ব্যাপারে সহযোগিতা করেছি মাত্র। কিন্তু কতো টাকা তুলেছে তা আমরা জানি না।
চিকন্দী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মেম্বার তমিজ খানের সাথে আলাপ কালে তিনি বলেন, বিদ্যুতের নতুন সংযোগ দেয়ার কথা বলে শাহ আলম চোকদার, নান্নু মাদবর এবং হাজী মোছলেম মাদবর এলাকাবাসীর কাছ থেকে ১ হাজার করে টাকা তুলেছেন তা আমি জানি। কিন্তু কতো টাকা করে তুলেছে তা জানি না।
১১ জানুয়ারী বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় চিকন্দী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ এনামুল মুন্সির সাথে মুঠো ফোনে আলাপ কালে তিনি বলেন, আমি ব্যাপারটি জানি না। আর এ ব্যাপারে আমার কাছে কেউ সালিশ নিয়ে আসেনি। আসলে আমি ব্যাপারটি দেখবো।
এ ব্যাপারে ১১ জানুয়ারী বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টায় শরীয়তপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার সোহরাব আলী বিশ্বাসের সাথে মুঠোফোনে আলাপ কালে তিনি বলেন, আবুড়া গ্রামের শাহ আলম চোকদার, নান্নু মাদবর এবং হাজী মোছলেম মাদবর শরীয়তপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কোন প্রতিনিধি নয়। তাদেরকে আমি চিনি না। তারা যে আমার নাম করে চাঁদা তুলছে তা আমি এই প্রথম শুনলাম। এ ব্যাপারে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আপনার মন্তব্য