আবদুল বারেক ভূইয়া
আঞ্চলিক ইজতেমার অংশ হিসেবে শরীয়তপুরে তিন দিনব্যাপী জেলা ইজতেমা শুরু হয়েছে। ১৫ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া এই ইজতেমা ১৭ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে।
ইজতেমা উপলক্ষে আংগারিয়া বাইপাস সড়কের দক্ষিণ পাশের পরসুদ্দি এলাকায় ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের অবস্থানের জন্য প্রায় ১৭ একর জায়গাজুড়ে অস্থায়ী অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে।
আয়োজকরা জানান, গত বছরের ইজতেমার বিষয়টি মাথায় রেখে এবার দ্বিগুণেরও বেশি জায়গা নিয়ে প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। মুসল্লিদের থাকার জন্য যে অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে, তাতে ৫০ হাজার মুসল্লি থাকতে পারবে। এ ছাড়া এবারের ব্যবস্থাপনায় প্রায় ২ লাখ মুসল্লি একসঙ্গে জুমার নামাজ আদায় করতে পারবেন।
মূলত এটা জেলা ইজতেমা হলেও শরীয়তপুর, মাদারীপুর, মুন্সিগঞ্জ, কেরানীগঞ্জ এবং চাঁদপুরসহ পাশ্ববর্তী বিভিন্ন জেলা থেকে মুসল্লিরা সমবেত হবেন।
১৫ ফেব্রুয়ারি ভোরে গিয়ে দেখা যায়, তাবলিগের মুসল্লি, বিভিন্ন মাদ্রাসা-স্কুল-কলেজের ছাত্র ও এলাকাবাসীদের সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত যৌথ স্বেচ্ছাশ্রমে তৈরি করেছেন ইজতেমার নানা অবকাঠামো। মুসল্লিদের থাকার শেড নির্মাণ, অজুখানা, শৌচাগারসহ অন্যান্য স্থাপনা তৈরি করেছেন। এ আয়োজনের কাজে বিদেশি ১০টি জামাতসহ ১০০টি দেশি জামাত সহযোগিতা করেছে।
২০১৬ সালের ১১ থেকে ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শরীয়তপুর সদর উপজেলার তুলাসার ইউনিয়নের আড়িগাঁও গ্রামে ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সে সময় প্রায় দেড় লাখ মুসল্লি একসাথে জুমার নামাজ আদায় করতে পেরেছিলেন। কিন্তু মুসল্লিদের সংখ্যা বেশি থাকায় কিছু সমস্যা হয়েছিল।
বিষয়টি মাথায় রেখেই এবার বিশাল পরিসরে ইজতেমার প্যান্ডেল তৈরি করা হয়েছে। মুসল্লিদের অজু করার জন্য দুটি পুকুরের চারপাশ দিয়ে ঘাটলা নির্মাণ করা হয়েছে। এ ছাড়া গোসলের জন্য ইজতেমার ময়দানের পাশেই রয়েছে কৃত্তিনাশা নদী। বিশুদ্ধ খাবার পানির জন্য মাঠজুড়ে ১ হাজার লিটার ও ৫০০ লিটারের ১০টি ট্যাংক বসানো হয়েছে। মাঠের চারপাশে অস্থায়ী পাঁচশ’ শৌচাগার নির্মাণ করা হয়েছে। ময়দানজুড়ে আলোর জন্য থাকবে আড়াই হাজারেরও বেশি বাতি।
নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য রয়েছে জেনারেটরের ব্যবস্থা। ইজতেমার মাঠ প্রস্তুতির জিম্মাদারের দায়িত্বে নিয়োজিত মুরব্বি মো. মোশারফ হোসেন বলেন, ‘ইজতেমায় ১০০টির বেশি তাবলিগ জামাতের মুসল্লি স্বেচ্ছাশ্রম দিচ্ছেন। ১০টি বিদেশি জামাতের পাশাপাশি ১টি বাকপ্রতিবন্ধীদের জামাতও আছে। এবারের আয়োজনে বাকপ্রতিবন্ধীদের জন্যও বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে।’
আপনার মন্তব্য