স্টাফ রিপোর্টার
শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার জপসা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডে খাটো কান্দি গ্রামে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে শাহিন শেখ (২৮) নামে এক কাঠমিস্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। শাহিন শেখের লাশ ময়না তদন্ত না করেই দাফন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২১ অক্টোবর রবিবার সকাল ৮টার দিকে জপসা ইউনিয়নের খাটো কান্দি গ্রামে আশ্রায়ণ প্রকল্প-২এর আওতায় “ভিটা আছে ঘর নেই” এই প্রকল্পের সদস্য রূববান বেগমের গৃহ নির্মাণ করতে গিয়েছিলেন কাঠমিস্ত্রী মোঃ শাহিন শেখ। নির্মাণাধীন গৃহের দুই ফুট উপরে থাকা পল্লী¬ বিদ্যুতের বৈদ্যুতিক খোলা তারের ¯পর্শে শাহিন শেখ উপর থেকে মাটিতে পড়ে যান এবং গুরুতর আহত হন।
তাৎক্ষণিক ভাবে তাকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত শাহিন শেখের বাড়ি নড়িয়া উপজেলার ভোজেশ্বর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের চান্দনী গ্রামে। সে আব্দুল হামেদ শেখের কনিষ্ঠ পুত্র।
স্থানীয়দের ধারণা পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগের দায়িত্ব অবহেলার কারণেই শাহিন শেখের মৃত্যু হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা কেন পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগের উপর কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় রহিম উদ্দিন বেপারী, আয়েশা বেগম এবং রোস্তম আলী বলেন, ঘরের উপর দিয়ে বিদ্যুতের লাইন নেয়ার তো কোন বিধান নেই। তারপরও পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগ মানুষের ঘরের উপর দিয়ে বিদ্যুতের সংযোগ দিচ্ছে। তাদের দায়িত্বে অবহেলার কারণেই শাহিন শেখের মৃত্যু হয়েছে। শুনেছি প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ নজরুল ইসলাম নিহত শাহিন শেখের দাফন কাফনের জন্য বিশ হাজার টাকা দিয়েছেন। এই বিশ হাজার টাকা দিলেই তো দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না। শাহিনের পরিবারের কি ব্যবস্থা হবে ? এতো বড় একটা ঘটনা ঘটলো কিন্তু পল্লী বিদ্যুতের কোন লোককে দেখা গেলো না।
এ ব্যাপারে নিহতের পিতা আব্দুল হামেদ শেখের সাথে আলাপ কালে তিনি বলেন, পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগের দায়িত্ব অবহেলার কারণেই শাহিন শেখের মৃত্যু হয়েছে।
ভোজেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ নুরুল হক বেপারীর সাথে আলাপ কালে তিনি বলেন, নিহতের পরিবার শাহিন শেখের লাশের ময়না তদন্ত করতে চায়নি। তাই নড়িয়া থানার ওসির সাথে আলাপ করে লাশ দাফন করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগের জেনারেল ম্যানেজারের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তাকে অফিসে পাওয়া যায়নি। পরে তার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তার মোবাইলটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে নড়িয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ নজরুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে আলাপ কালে তিনি বলেন, প্রচলিত আইনে নিহতের ময়না তদন্ত করা উচিত ছিলো। কিন্তু নিহতের পরিবার ময়না তদন্ত করতে চায়নি, তাই লাশ দাফন করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ.কে.এম মঞ্জুরুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে আলাপ কালে তিনি বলেন, একজন ওসি ইচ্ছে করলে একটি লাশকে ময়না তদন্ত ছাড়াই দাফন করার অনুমতি দিতে পারে।
এ ব্যাপারে শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার আবদুল মোমেন এর সাথে মুঠোফোনে আলাপ কালে তিনি বলেন, আমি অফিসিয়াল কাজে ঢাকায় আছি। এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না। তবে পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগের দায়িত্ব অবহেলার কারণে যদি দুর্ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
শরীয়তপুরে পল্লী বিদ্যুতের দায়িত্ব আবহেলার কারণে কাঠমিস্ত্রীর মৃত্যু
অক্টোবর ২২, ২০১৮ , ০৬:৪২
আপনার মন্তব্য