মোঃ নাসির খান
শরীয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলার চরচান্দা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আনিছুর রহমানের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের ছাত্রীকে যৌন হয়রানীর অভিযোগ উঠেছে। আর এ অভিযোগটি করেছেন ভেদরগঞ্জ উপজেলার চর কোরালতলী মৃধা কান্দি গ্রামের শহীদ ঢালীর মেয়ে এবং চরচান্দা উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিতব্য এস.এস.সি পরীক্ষার্থী সুমাইয়া। এ ব্যাপারে তিনি ভেদরগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা’র বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগে বলা হয়েছে, চরচান্দা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আনিছুর রহমান অত্র বিদ্যালয়ের এস.এস.সি পরীক্ষার্থী সুমাইয়াকে পরীক্ষায় ভাল নাম্বার পাইয়ে দেয়ার কথা বলে তাকে যৌন হয়রানীর কু-প্রস্তাব দেয়। তারই ধারাবাহিকতায় গত ১২ ডিসেম্বর বুধবার সুমাইয়াকে বিদ্যালয়ের শ্রেণী কক্ষে ডেকে নিয়ে কু-প্রস্তাব দেয় এবং শরীরের স্পর্শ কাতর স্থানে স্পর্শ করেন। তাৎক্ষণিক ভাবে সুমাইয়া বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেনকে বিষয়টি অবহিত করেন। কিন্তু প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় সুমাইয়া ভেদরগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা’র বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।
সুমাইয়ার বাবা শহীদ ঢালী কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, শিক্ষকরা হলেন মানুষ গড়ার কারিগর। প্রত্যেকটি অভিভাবক তাদের সন্তানদেরকে শিক্ষকদের কাছে নিরাপদ আশ্রয়স্থল ভেবে তাদের কাছে পড়তে দেন। আর সেই শিক্ষকরাই যদি রক্ষক হয়ে ভক্ষকের ভূমিকা পালন করে তাহলে আমরা যাই কই ? আমার সন্তান এবার এস.এস.সি পরীক্ষা দেবে। সে মানষিক ভাবে ভেঙ্গে পড়েছে। আমার সন্তানের উপর যে অন্যায় অত্যাচার হয়েছে আমি এর বিচার চাই।
প্রধান শিক্ষক আনিছুর রহমানের সাথে মুঠোফোনে আলাপ কালে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সত্য নয়। তদন্ত করলেই সঠিক চিত্র বেড়িয়ে আসবে।
এ ব্যাপারে চরচান্দা উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আমির হোসেন হাওলাদারের সাথে মুঠোফোনে আলাপ কালে তিনি বলেন, আমি ব্যাপারটি শুনেছি। তদন্তে যদি দোষী সাব্যস্ত হয় তাহলে তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাব্বির আহমেদ’র সাথে মুঠোফোনে আলাপ কালে তিনি বলেন, ১৩ ডিসেম্বর বুধবার বিকেলে সাড়ে ৪টায় মেয়েটি এবং মেয়েটির বাবা প্রধান শিক্ষক আনিছুর রহমানের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছে। যেহেতু ব্যাপারটি খুব স্পর্শ কাতর। তাই ব্যাপারটি তদন্তের জন্য একজন দায়িত্বশীল মহিলা অফিসারকে সদস্য সচিব করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ৭ কর্ম দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবার কথা বলা হয়েছে। প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আপনার মন্তব্য