
স্টাফ রিপোর্টার
শরীয়তপুরে স্ত্রীকে হত্যার অপরাধে স্বামী ফারুক খলিফাকে (৩৩) মৃত্যু দন্ডের আদেশ দিয়েছে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবদুস ছালাম খান।
২৭ মার্চ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় সকল আসামীর উপস্থিতিতে এ আদেশ দেয়া হয়। আর এ মামলার অপর দুই আসামী জলিল খলিফা এবং ফুলমতি বেগমকে বেকসুর খালাস প্রদান করেছে আদালত।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ঘটনার ১বছর পূর্বে শরীয়তপুর সদর উপজেলার পশ্চিম কোয়ারপুর বেপারী কান্দিও গ্রামের জলিল খলিফার পুত্র ফারুক খলিফার সাথে একই ইউনিয়নের দপ্তরকান্দি গ্রামের আবুল হোসেন খানের মেয়ে শেফালী বেগমের বিয়ে হয়। বিবাহের পর থেকেই শ্বশুর-শ্বাশুড়ি এবং স্বামী যৌতুকের দাবীতে শেফালীকে নির্যাতন করতেন।
নির্যাতনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে শেফালী বেগমের পিতা বাদী হয়ে পালং মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।
২০১১ সালের ২৬ ডিসেম্বর বিকাল ৩টার সময় যৌতুকের দাবীতে স্বামী ফারুক খলিফা, শ্বশুর জলিল খলিফা এবং শ্বাশুড়ি ফুলমতি বেগম মিলে পুণরায় শেফালী বেগমকে প্রচুর শারীরিক নির্যাতন করেন।
নির্যাতনের এক পর্যায়ে শেফালী অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে ১ বছর চিকিৎসা করার পর ২০১২ সালের ১২ ডিসেম্বর শেফালী মৃত্যু বরণ করেন।
শেপালীর মৃত্যুর পর মামলাটির ধারা পরিবর্তন হয়ে যৌতুকের দাবীতে হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়। এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা, মেডিকেল অফিসার এবং জবানবন্দী গ্রহনকারী জ্যুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেটসহ মোট ১০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করার ৮ বছর পর মামলার রায় ঘোষণা হলো।
রাষ্ট্র পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন নারী ও শিশু দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি এ্যাডভোকেট ফিরোজ আহমেদ। বাদী পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এ্যাডভোকেট মোঃ কবির হোসেন এবং এ্যাডভোকেট তরিকুল ইসলাম সোহাগ। আসামী পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন এডভোকেট বজলুর রশিদ আকন্দ।
এ রায়ে নিহতের পরিবার, রাষ্ট্র পক্ষের কৌশলী এবং বাদী পক্ষে নিযুক্ত আইজীবীরা ন্যায় বিচার পেয়েছেন বলে অভিমত প্রকাশ করেছেন। অপরদিকে আসামী পক্ষের আইনজীবী এ্যাডভোকেট বজলুর রশিদ আকন্দ বলেন, তারা ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। তারা উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলে জানিয়েছেন।
আপনার মন্তব্য