
স্টাফ রিপোর্টার
শরীয়তপুর পৌরসভা নির্বাচনে সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীরা দলীয় মনোনয়ন পেতে কেন্দ্রীয় হাইকমান্ডের নিকট দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। ১৬ জানুয়ারি দ্বিতীয় দফায় শরীয়তপুর পৌরসভার ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
সে লক্ষ্যে ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে বলা হয়েছে। ২২ ডিসেম্বর বাছাই এবং ২৯ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। যার প্রেক্ষিতে শরীয়তপুর পৌরসভায় আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা নির্বাচন উপলক্ষ্যে ব্যাপক প্রস্ততি নিয়েছে।
২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর শরীয়তপুর পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা মনোনয়ন পেতে ইতোমধ্যে লবিং ও গ্রুপিং শুরু করেছে। জেলা ও কেন্দ্রের শীর্ষ নেতাদের আশীর্বাদ পেতে তারা প্রতিনিয়ত যোগাযোগ শুরু করেছে। আর প্রার্থীরা স্থানীয় নেতাদের সমর্থন পেতে বাড়িয়ে দিয়েছেন সাংগঠনিক তৎপরতা। পাশাপাশি নেতাদের ছবি সম্বলিত ব্যানার এবং ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে পুরো পৌর এলাকা।
এবার আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন পৌরসভার বর্তমান প্যানেল মেয়র এবং জেলা যুবলীগ নেতা বাচ্চু বেপারি, পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এম জাহাঙ্গীর, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এ্যাডভোকেট আলমগীর হোসেন মুন্সি, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন কোতোয়াল, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান পাহাড় এবং শরীয়তপুর জজকোর্টের এপিপি পারভেজ রহমান জন। তারা আগামী নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড এবং দলীয় নেতা কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে দিয়েছেন। এদিকে বিএনপি’র মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে শরীয়তপুর জেলা বিএনপি’র দপ্তর সম্পাদক এ্যাডভোকেট মোহাম্মদ কামরুল হাসান ও পৌর বিএনপির সভাপতি এ্যাডভোকেট লুৎফর রহমান ঢালীর নাম শোনা যাচ্ছে। আর জাতীয় পার্টির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে জেলা জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক সাহিদ সরদারের নাম শোনা যাচ্ছে।
পৌরসভার বর্তমান মেয়র মোঃ রফিকুল ইসলাম কোতোয়ালও মেয়র প্রার্থী হবেন বলে জানা গেছে। তবে বর্তমান সরকারের আমলে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় সারাদেশে পিচ কমিটির সদস্যদের যে নামের তালিকা প্রস্তুত করেছেন, সেই তালিকায় মোঃ রফিকুল ইসলামের পিতা মরহুম আব্দুর রশীদ কোতোয়ালের নামটি ৪০ নম্বরে রয়েছে। এছাড়াও শরীয়তপুরের বিশিষ্ট লেখক আব্দুর রব সিকদার রচিত ‘মুক্তিযুদ্ধে শরীয়তপুর’ বইয়ের ১৩৫ নং পৃষ্ঠায় ১৯৭১ সালে পালং থানাধীন পিচ কমিটির সদস্যগণের যে নামের তালিকা দেয়া হয়েছে তাতে মরহুম আব্দুর রশীদ কোতোয়ালের নাম ২২ নং ক্রমিকে রয়েছে। এতে আওয়ামী লীগ ঘরোনায় তাকে নিয়ে নতুন বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।
নির্বাচনকে সামনে রেখে বর্তমান মেয়র মোঃ রফিকুল ইসলাম কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন জেলার মুক্তিযোদ্ধাসহ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের কাছে। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা জানিয়েছেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় রফিকুল ইসলাম কোতোয়ালের পিতা মৃত আব্দুর রশীদ কোতোয়াল শরীয়তপুরে স্বাধীনতাবিরোধী পিচ কমিটির অন্যতম সদস্য ছিলেন এবং মুক্তিযুদ্ধের চরম বিরোধিতা করেছেন। তিনি ছিলেন তৎকালীন পালং থানার পিস কমিটির সদস্য ও রাজাকারদের পৃষ্ঠপোষক। তাই স্বাধীনতাবিরোধীর পুত্র হিসেবে পরিচিত মোঃ রফিকুল ইসলাম কোতোয়ালকে এবারের পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনয়ন দিলে জেলার আওয়ামী লীগ ঘরোনার মুক্তিযোদ্ধাসহ স্থানীয় দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হবে বলে নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেছেন।
শরীয়তপুর পৌরসভার বর্তমান প্যানেল মেয়র এবং জেলা যুবলীগ নেতা বাচ্চু বেপারি বলেন, আমি শরীয়তপুর পৌরসভায় প্যানেল মেয়র হিসেবে জনগণের চাহিদা মোতাবেক এলাকায় ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ করেছি। যে কারণে আমার দল ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন মনোনয়ন বোর্ড আগামী নির্বাচনে আমাকে মনোনয়ন দিলে নৌকার প্রার্থী হিসেবে আমি বিজয়ী হব।
আপনার মন্তব্য