আবদুল বারেক ভূইয়া
শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার সেনের চর ইউনিয়নের ২৩নং মানিক নগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চলছে কোচিং ব্যাণিজ্য। আর এ কোচিং বাণিজ্য করে শিক্ষকরা হাতিয়ে নিচ্ছেন মোটা অংকের টাকা।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, মানিক নগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২শত ৫৯জন ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। তার মধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীতে ১৬৪ জন, তৃতীয় শ্রেণীতে ৫২জন, চতুর্থ শ্রেণীতে ৪৭ জন এবং পঞ্চম শ্রেণীতে ৪৬জন ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। আর ওই সকল ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষাদানের জন্য দশ জন শিক্ষক রয়েছেন। সরকারী বিধি মোতাবেক কোচিং বাণিজ্যে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও প্রশাসনের চোখের সামনে কোচিং বাণিজ্য দ্বিধাহীন ভাবে চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। সকাল ৯টায় কোচিং ব্যাণিজ্য শুরু হয় আর চলতে থাকে সারা দিন।
২৩নং মানিক নগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী খাতিজা আক্তার, হাপসা আক্তার, অনিকা আক্তার এবং আরিফ হোসেনের সাথে আলাপ কালে তারা বলেন, আমরা প্রতিদিন আমরা আমাদের প্রধান শিক্ষক পারভেজ আক্তার আপার কাছে কোচিং ক্লাশ করি। আমাদের কাছ থেকে প্রতি মাসে ৫শত টাকা করে নেয়। তার কাছে কোচিং না করলে আমাদেরকে পিটায় এবং পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেবার ভয় দেখায়।
তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রী ছিলমী আক্তার এবং দোলামনির সাথে আলাপ কালে তারা বলেন, আমরা বিলকিছ আপার কাছে কোচিং করি। সে আমাদের কাছ হতে ৪শত টাকা করে নেন।
পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী সাকিলা আক্তার বলেন, আমার বাবা পান বিক্রি করেন। প্রতি মাসে পাঁচশত টাকা কোচিং ফি দিতে আমাদের অনেক কষ্ট হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবকের সাথে আলাপ কালে তিনি বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষ পারভেজ আক্তারের লেখা পড়ার মান তেমন ভাল না। তিনি অনেক প্রভাবশালী। তার কাছে আমরা জিম্মী হয়ে আছি। তার কাছে কোন ছাত্র-ছাত্রীরা কোচিং না করলে তাকে পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেন। তাই অনিচ্ছা সত্ত্বেও তার কাছে কোচিং করাতে হয়।
এ ব্যাপারে ২৩নং মানিক নগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পারভেজ আক্তারের সাথে আলাপ কালে তিনি বলেন, আমার স্কুলে কোন কোচিং ক্লাশ করানো হয় না।
২৩নং মানিক নগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মেনেজিং কমিটির সদস্য মোখলেছ মাদবর জানান, আমাদের বিদ্যালয়ে আগে কোচিং করানো হতো। আমরা কোচিং করানো নিষেধ করেছি। এখন যে আবার নতুন করে কোচিং করান হয় তা আমি জানি না।
জাজিরা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা র্কমর্কতার সাথে মুঠো ফোনে আলাপ কালে তিনি বলেন, আমি বিষয়টি জানি না। আমি বর্তমানে ঢাকায় ট্রেনিংয়ে আছি। ট্রেনিং থেকে এসে বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেবো।
সরকারী স্কুলে চলছে কোচিং ব্যাণিজ্য
মার্চ ২০, ২০১৮ , ২৩:০৩
আপনার মন্তব্য