
জসিম উদ্দীন জিহাদ,
সমালোচনা থেকে নিজেকে বাঁচাতে গতকাল শনিবার (১৬ফ্রেব্রুয়ারি) ইয়াবা কারবারিদের আত্মসমর্ণ অনুষ্ঠানে যোগদান থেকে বিরত ছিলেন সাবেক সংসদ আবদু রহমান বদি। তবে উপস্থিত ছিলেন বদির সহচর ও তালিকাভুক্ত গডফাদার জাফর আলম চেয়ারম্যান।
ইয়াবা কারবারিদের আত্মসমর্পণ অতিথি একজন ইয়াবা গডফাদার তা মেনে নিতে পারছে না মিডিয়া থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষও। তাই গতকাল শনিবার আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠান শেষ হবার পর পরই সোশ্যাল মিডিয়া ও সংবাদ মাধ্যমে জাফর চেয়ারম্যানে উপস্থিতির ছবি ভাইরাল হলে সমালোচানার ঝড় চলছে সর্বত্র।
এমতাবস্থায় মূখ সমালোচনা হজম করতে না পেরে মূখ খুললেন টেকনাফ উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আলম। দাবি করলেন তিনি ডিসি কর্তৃক সরকারের আমন্ত্রিত অতিথি হিসাবে উক্ত অনুষ্ঠানে যোগদান করেছেন।
তিনি আরো দাবি করেছেন, ইয়াবা কারবারের দায়ে গতকাল শনিবার দোষ স্বীকার করে আত্মসমর্পণ করা তার ছেলে ও তিনি যে অন্যতম তা সরকার জানেন বলেই তাকে সরকার অতিথি করেছেন। না হয় তিনি এমন একটা অনুষ্ঠানে দাওয়াত পেতেন না।
গতকাল রাতে আমন্ত্রণের একটি কার্ড ও তার ছবি সহ টেকনাফ টুডে নামক একটি অনলাইনে উপজেলা চেরাম্যান জাফর আলমের কিছু কথা শিরোনামে একটি লেখা প্রকাশ করেছেন। যা হুবহু তুলে ধরা হলো…
টেকনাফ উপজেলা জাফর আহামদ’র কিছু কথা…
আমি আলহাজ্ব জাফর আহমদ, চেয়ারম্যান, টেকনাফ উপজেলা পরিষদ টেকনাফ
‘আজ ১৬ ই ফেব্রুয়ারি টেকনাফের ইয়াবা কারবারীদের আত্মসমর্পন অনুষ্ঠানে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন প্রশাসনের দায়িত্বরত অফিসাররা প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সুন্দর ও সফল ভাবে শেষ করেছেন তার জন্য আমরা টেকনাফের সমস্ত জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ মানুষ অত্যন্ত আনন্দিত এবং আপনার কাছে চিরকৃতজ্ঞ।
উল্লেখ্য, আমি বর্তমান টেকনাফ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্বে আছি। সেহেতু কক্সবাজার ডিসি মহোদয়ের দাওয়াত কার্ড পেয়ে আমি ও আমার ছেলে টেকনাফ সদর ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান শাহাজান মিয়া আত্মসমর্পন অনুষ্টানে স্ব-শরীরে উপস্থিত থেকে সবাই কে উৎসাহিত করেছি।
কিন্তু অত্যন্ত দু:খের সহিত ভারাক্রান্ত মন নিয়ে বলতেছি যে, আমি আর আমার সন্তান যদি অসৎ লোক হয়ে থাকি সরকারের পক্ষ থেকে কখনো দাওয়াত কার্ড পেতাম না। বরং অবহেলার স্বীকার হতাম। আর আমরা যদি সত্যিই সত্যিই মাদক ব্যাবসায়ী হয়ে থাকি আপনারা সঠিক যাচাই বাচাই করে প্রশাসনকে সঠিক তথ্য দিয়ে সাহায্য করুন। সরকারের সব শাস্তি মাথা পেতে নিব, ইনশাআল্লাহ।
পরিশেষে বলতে চাই, কথিত হলুদ মিডিয়া ভাইয়েরা আমি আর আমার সন্তানকে মুখে গোল চিহ্ন দিয়ে যে মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন অপপ্রচার চালাচ্ছেন, আপনারা শুধু আমাদেরকে কলংখিত করেননি, কলংখিত করছেন মহান পবিত্র সাংবাদিকতা পেশাকেও।
বিশেষ কথা হচ্ছে, আমি বিগত ৪৫ টি বছর রাজনৈতিক জীবন সফলভাবে পার করে আসছি, সর্বশেষ আমাকে বিগত উপজেলা নির্বাচনেও টেকনাফের সাধারণ জনগন বিপুল ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করেন, মনে হয় এটাই আমার পাপ, তা না বলে এমন হওয়ার কথা নয়।
আগামী ২৪ ই মার্চ টেকনাফ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন, আমার প্রতিপক্ষ ও ষড়যন্ত্রকারীরা আবারো আমার নিশ্চিত বিজয় দেখে উঠে পড়ে লেগেছে এবং আমার পরিবারকে হুমকির মুখে ফেলতে তারা পাঁয়তারা চালিয়ে যাচ্ছে।
আমি টেকনাফের সকল জনগন, গোয়েন্দা বিভাগ, প্রশাসন এবং সর্ব শ্রেণীর মানুষকে এই মিথ্যে, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন সংবাদ পড়ে বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।
উল্লেখ্য জাফর আলম চেয়ারম্যানকে সরকার ও গোয়েন্দা সংস্থার বিভিন্ন তালিকায় প্রথম শ্রেণীর গডফাদার হিসেবে তালিভুক্ত করা হয়েছে।
আপনার মন্তব্য