
স্টাফ রিপোর্টার
গণতন্ত্র নির্বাসনে দিয়ে সরকার দেশে ‘হরণতন্ত্র’ চালু করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বৃহস্পতিবার (০৪ এপ্রিল) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের উদ্যোগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিভোক্ষ সমাবেশ ও মিছিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীকে ইঙ্গিত করে রিজভী বলেন, আপনি এক এক করে গণতন্ত্র হরণ করেছেন। স্বাধীনতাকে ধ্বংস করেছেন। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ করেছেন। মানুষের মৌলিক অধিকার হরণ করেছেন। আপনি গণতন্ত্র ধ্বংস করে দেশে ‘হরণতন্ত্র’ চালু করেছেন। তারপরও কি টিকে থাকা যাবে? গণজোয়ারের সম্ভাবনা আপনি হয়তো টের পাচ্ছেন না। কিন্তু অন্যায়-অবিচারের লৌহ-শৃঙ্খল ভেঙে যে গণজোয়ার তৈরি হবে, সেই গণজোয়ার আপনি কোনোভাবে ঠেকাতে পারবেন না।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানিয়ে রিজভী আহমেদ বলেন, অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে সত্যের জন্যে এ ইট-পাথর-কংক্রিটের রাজপথের মিছিল চলবে। আন্দোলন চলবে। যাত্রাবাড়ি থেকে গাবতলী আর টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া মিছিল থামবে না। যতক্ষণ পর্যন্ত না গণতন্ত্রের মুক্তি হয়, যতক্ষণ পর্যন্ত না গণতন্ত্রের মাতা খালেদা জিয়া মুক্ত হন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে বন্দি করে রেখেছেন। তাতে আপনার সাময়িক লাভ। কিন্তু আপনার মনে কী শান্তি আছে? অবৈধভাবে, অন্যায়ভাবে ক্ষমতায় থাকলে মনে কখনই শান্তি থাকে না। সব সময়ে পতনের আশঙ্কায় আপনার দুশ্চিন্তা থাকবে। নেলসন মেন্ডেলাকে ২৭ বছর কারাগারে আটক করে রাখা হয়েছিল। সে দেশের শ্বেতাঙ্গ সরকার আটকিয়ে রেখেছিল। তাতে জনগণ কার দিকে ছিল? বিশ্বজনমত কার দিকে ছিল? শ্বেতাঙ্গরা সেদিন বাঁচতে পারেনি। গোটা বিশ্বে নন্দিত-জননন্দিত নেতা নেলস মেন্ডেলা। আপনি খালেদা জিয়াকে জেলে রেখেছেন, বন্দি রেখেছেন। তিনি আর বাংলাদেশের নেতা নন, এশিয়া, ল্যাটিন আমেরিকার মানুষের কন্ঠে ধবনিত হচ্ছে, খালেদা জিয়া, খালেদা জিয়া। তিনি অন্যায়-প্রতিহিংসা-জিঘাংসার শিকার। তার চিকিৎসাও করতে দিচ্ছেন না।
রিজভী আরও বলেন, দেশনেত্রী সুস্থ মানুষ কারাগারে হেঁটে গেলেন। এখন তিনি হাঁটতে পারছেন না। হুইল চেয়ার ব্যবহার করছেন। তিনি মাথা সোজা করতে পারছেন না। জেলখানার একটি অন্ধকার প্রকোষ্ঠের মধ্যে রেখেছেন তাকে। সেখান থেকে টেনে হেঁচড়ে ২ দিন পর পর আদালতে নিয়ে যাচ্ছেন। কেনো? এই টানা-হেঁচড়া করে কি দেশনেত্রীকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দিতে চাচ্ছেন?
মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত না আমরা আমাদের মাতা দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে না পারবো ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম চলছে এবং চলবে। আমরা শুধু বলতে চাই, জাগো নারী জাগো বহ্নি শিখায় …. এটাই হোক আমাদের অঙ্গীকার।
সমাবেশ শেষে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে থেকে কাকরাইলের নাইটেঙ্গল রেস্তোরার মোড় পর্যন্ত মিছিল বের করে মহিলা দল। এ সময়ে নেতাকর্মীদের হাতে খালেদা জিয়ার মুক্তি সম্বলিত বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।
আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে ও মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন- মহিলা দলের হেলেন জেরিন খান, পেয়ারা মোস্তফা, শামসুন্নাহার ভুঁইয়া, সাবিনা ইয়াসমীন, মাসুদা খানম লতা, নিলুফার ইয়াসমীন নিলু, সেলিনা হাফিজ, মর্জিনা আফসারী প্রমূখ।
আপনার মন্তব্য