সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
সুনামগঞ্জের সদর, বিশ্বম্ভরপুর, দোয়ারাবাজার উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত চলতি নদীর বালাকান্দা বাজার ও রামপুরের মধ্যবর্তী স্থানে পাকা সেতু না থাকায় ৫০টির বেশি গ্রামের আড়াই লাখের বেশি মানুষ দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।
সেতু না থাকায় এই বিপুল সংখ্যক মানুষকে ৬টি খেয়াঘাট পাড়ি দিয়ে চলাচল করতে হয়। বড়রা কোনোমতে যাতায়াত করতে পারলেও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাতায়াতকারী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য এভাবে চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ।
পাকা সেতুর জন্য এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে এলেও তা বরাবরই উপেক্ষিত হয়ে আসছে। বিভিন্ন নির্বাচনের সময় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিলেও এখনও কেউ তাদের কথা রাখেননি।
স্থানীয়রা জানান, সদর, বিশ্বম্ভরপুর, দোয়ারাবাজার উপজেলার জাহাঙ্গীর নগর, রঙ্গারচর, সুরমা, সলুকাবাদ, পলাশ ও ধনপুর ইউনিয়নের বালাকান্দা, রামপুর, ডলুরা, নারায়নতলা, ইসলামপুর, বিরামপুর, জরজরিয়া, বনগাঁও, আশাউড়া, ঘাসিগাঁও, বাঘমারা, কৃষ্ণনগর, কাছারষোলঘর, পার্বত্যপুর, সৈয়দপুর, হালুয়ারগাঁও, শরীয়তপুর, মুসলিমপুর, সাহেবনগর, উড়ারকান্দাসহ ৫০টি গ্রামের মানুষ বছরের পর বছর ধরে চলতি নদীর ওপর পাকা সেতুর দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু সে দাবি পূরণ না হওয়ায় বালাকান্দা, সাহেবনগর, অরুনিশা, কাইয়ারগাঁও, ডলুরা, জিনারপুর, উড়াকান্দা ঘাটে খেয়া-নৌকায় তাদের যাতায়াত করতে হয়।
স্থানীয়রা জানান, সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজ, বিশ্বম্ভরপুরের দীগেন্দ্র বর্মণ ডিগ্রি কলেজ, রাতারগাঁও হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ, সৈয়দপুর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কৃষ্ণনগর হোসেনিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, জরজরিয়া নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সৈয়দপুর মাদ্রাসা, মুসলিমপুর মাদ্রাসা, নারায়তনতলা মিশন উচ্চ বিদ্যালয়, ভৈষারপাড় মতিউর রহমান কলেজসহ ১০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কয়েক হাজার শিক্ষার্থীকে ঝুঁকি নিয়ে ৬ জায়গায় খেয়া পাড়ি দিয়ে চলাচল করতে হয়।
রতারগাঁও স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী শিক্ষক আব্দুল কদ্দুছ বলেন, ‘তিন বছর আগে বর্ষাকালে চলতি নদী পার হয়ে স্কুলে আসার পথে নৌকা ডুবে এক ছাত্রী মারা যান। এরকম ঘটনা বর্ষাকালে প্রায়ই ঘটে। ফলে বর্ষাকালে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার অনেক কমে যায়।’
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য মতিউর রহমান বলেন, ‘চলতি নদীর বালাকান্দা ও অক্ষয়নগর এলাকার দুই স্থানে সেতু নির্মাণের প্রস্তাবনা সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠানো হয়েছে বলে আমাকে জানিয়েছেন সদর উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মো. আনোয়ার হোসেন। প্রস্তাব অনুমোদিত হলে সেতু নির্মাণের কার্যক্রম শুরু হবে।’
আপনার মন্তব্য