
স্টাফ রিপোর্টার
১শ টাকা না দেয়ায় গরম পানি দিয়ে সোনিয়া আক্তার (২২) নামে এক গৃহবধূর শরীর ঝলসে দিয়েছেন তার স্বামী। গুরুতর অবস্থায় শনিবার (০৭ ডিসেম্বর) সকাল ৯টার দিকে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার গোসাইরহাট ইউনিয়নের টেংরা গ্রামে শুক্রবার (০৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আহত সোনিয়া আক্তার টেংরা গ্রামের আবুল হোসেন সরদারের স্ত্রী। আরিফা সিনহা (১) নামে তার এক মেয়ে সন্তান রয়েছে। বর্তমানে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সোনিয়া।
হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের বিছানায় যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন সোনিয়া। শরীরের অর্ধেক অংশ কাপড়ে ঢাকা তার। পিঠ, হাত ও গলাসহ অর্ধেক শরীর ঝলসে গেছে তার।
সোনিয়া আক্তার বলেন, টেংরা গ্রামে চায়ের দোকান করি আমি। স্বামী আবুল হোসেন সরদার শ্রমিক। শুক্রবার সন্ধ্যায় আমার কাছে ১শ টাকা চান আবুল। টাকা দিতে অস্বীকার করলে রেগে যান এবং মন্দ কথা বলা শুরু করেন। একপর্যায়ে চায়ের দোকানের কেটলির গরম পানি আমার শরীরে ঢেলে দেন আবুল।
তিনি আরও বলেন, ২০১৭ সালে পারিবারিকভাবে আমাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর বাবার বাড়ি থেকে ৫০ হাজার টাকা এনে স্বামীকে যৌতুক দিয়েছি। এরপরও বিভিন্ন সময় যৌতুকের জন্য আমাকে মারধর করা হয়।
সোনিয়ার স্বামী আবুল হোসেন সরদার বলেন, সোনিয়ার সঙ্গে টাকা নিয়ে বাগবিতণ্ডা হয়। এ সময় দুজনের হাতাহাতি হয়। হাতাহাতির সময় দোকানের চায়ের কেটলি নিয়ে টান দিলে গরম পানি সোনিয়ার শরীরে পড়ে, আমার শরীরেও পড়েছে।
সোনিয়ার খালাতো বোন মাকসুদা বেগম ও প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন বলেন, দোকানের চায়ের কেটলির পানি ঢেলে দিলে সোনিয়ার শরীরের অর্ধেক ঝলসে যায়। মাটিতে গড়াগড়ি দিয়ে চিৎকার করেন সোনিয়া। এ সময় স্বামী তাকে ফেলে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। শুক্রবার সন্ধ্যায় সোনিয়াকে গোসাইরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে সেখানের চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার তাকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে পাঠান।
এ বিষয়ে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসক আকরাম এলাহী বলেন, ওই গৃহবধূর শরীরের ১৫ শতাংশ ঝলসে গেছে। তার চিকিৎসা চলছে।
শরীয়তপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গোসাইরহাট সার্কেল) মোঃ মোহাইমিনুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি। তবে এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আপনার মন্তব্য