
স্টাফ রিপোর্টার
শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলায় ধানকাঠি ইউনিয়নের চরধানকাঠি গ্রামের জয়নাল বেপারীর ছেলে মোমিন বেপারীর বিরুদ্ধে ৬ষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীকে মুখ বেঁধে তুলে নিয়ে জোর করে ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনাটি একই উপজেলার কনেশ্বর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের ছাতিয়ানি গ্রামে ঘটেছে বলে মামলার এজাহারে প্রকাশ পেয়েছে। ধর্ষিত ছাত্রীর মা এ ঘটনায় মোমিন বেপারী ও তার চাচাতো ভাই আবু বেপারীকে আসামী করে ডামুড্যা থানায় একটি ধর্ষণ মামলা করেছেন।
এদিকে পুলিশ বলছে, আসামীকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। অপরদিকে মেয়েটির পরিবার বলছে, আসামী প্রকাশ্য দিবালোকে ঘুরে বেড়াচ্ছে। পুলিশ ইচ্ছে করেই কোন আসামীকে গ্রেফতার করছে না।
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্র জানা যায়, ধর্ষিতা মেয়েটি হচ্ছে ডামুড্যা উপজেলার ছাতিয়ানি গ্রামের এক প্রান্তিক হতোদরিদ্র কৃষকের মেয়ে। সে কনেশ্বর এস.সি এ্যাডওয়ার্ড ইনস্টিটিটিউশনের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী।
সে গত ৩০ জুলাই সকাল ৯টায় বাড়ি থেকে স্কুলে যাচ্ছিল। স্কুলে যাওয়ার সময় মোমিন বেপারী পেছন থেকে গামছা দিয়ে তার মুখ বাঁধে এবং জোর করে নৌকায় তোলে। তারপর চরধানকাঠি গ্রামের হাসান বেপারীর পরিত্যাক্ত ঘরে নিয়ে ধর্ষণ করে। মেয়েটি চিৎকারে সাহিদা বেগমসহ স্থানীয় কয়েকজন নারী এসে তাকে উদ্ধার করে। এদিকে মোমেন বেপারী তাৎক্ষণিক ভাবে পালিয়ে যায়।
এ ঘটনার সঠিক বিচার পেতে মেয়েটির পরিবার স্থানীয় মাতব্বরদের বিষয়টি অবগত করেন। কিন্তু স্থানীয় মাতব্বররা থানায় মামলা করবে বলে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে ৭ হাজার টাকা নেন। টাকা নেয়ার পর তারা মামলা না করে বিভিন্ন ধরণের তালবাহানা শুরু করেছেন। পরে মেয়েটির মা শরীয়তপুর আদালতে এসে মোমেন বেপারী ও তার সহযোগী চাচাতো ভাই আবু বেপারীকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। আদালতে মামলা হওয়ার পর গত ৭ আগস্ট ডামুড্যা থানায় আরেকটি মামলা হয়। ১৭ আগস্ট পুলিশ তদন্তের জন্য ঘটনাস্থলে আসেন।
কনেশ্বর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড সদস্য সাজ্জাদ আলী সাজু বলেন, ঘটনা আরও আগে ঘটেছে। স্থানীয় মাতব্বরদের জন্য মামলা করতে দেরি হয়েছে। পরে ওই মেয়ের পরিবার আমার কাছে আসে, আমি কোর্টে মামলা করার কথা বলি। মেয়েটির যে ক্ষতি করেছে তার সঠিক বিচার হওয়া দরকার।
ওই ছাত্রীর বাবা বলেন, জয়নাল বেপারীর ছেলে মোমেন বেপারী আমার মেয়ের ক্ষতি করেছে। আমি একজন কৃষক। বিচার পেতে স্থানীয় মাতব্বরদের কাছে গেলে তারা ৭ হাজার টাকা নেয়। কিন্তু তাদের কাছে গিয়ে বিচার পাইনি। তাই মোমেন বেপারী ও তার চাচাতো ভাই আবু বেপারীর বিরুদ্ধে থানায় ও কোর্টে মামলা করা হয়েছে।
ওই ছাত্রী বলেন, মোমেন বেপারী গামছা দিয়ে পেছন থেকে আমার চোখ-মুখ বেঁধে নৌকায় তোলে। পরে একটি ঘরে নিয়ে আমার সঙ্গে খারাপ কাজ করে। আমি চিৎকার করলে গলা টিপে মেরে ফেলবে বলে হুমকি দেয়।
ডামুড্যা থানা পুলিশের ওসি (তদন্ত) ইমারত হোসেন বলেন, এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা করেছেন। মামলার পর মেয়েটিকে শারীরিক পরীক্ষার জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশ কাজ করছে।
আপনার মন্তব্য